ডেঙ্গু নিয়ে দীর্ঘকালীন পরিকল্পনা ও গবেষণা প্রয়োজন
ডেঙ্গু ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। এডিস মশার প্রকোপ গত পাঁচ বছরের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। তবে খোদ রাজধানীতে এর ভয়াবহতা সবচেয়ে বেশি।
এর মধ্যে আবার এ জুলাই মাসকে বিশেষভাবে চিহ্নিত করা যায়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত ১৯ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এ ১৯ জনের মধ্যে ১৭ জনই ঢাকার বাসিন্দা। মৃত্যুর দিক বিবেচনায় গত ৫ বছরের মধ্যে একদিনে এটাই সর্বোচ্চ।
এ ছাড়াও উল্লিখিত দিনে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা ছিল এক হাজার ৭৯২ জন। এ বছরে এই নিয়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর মৃতের সংখ্যা দাঁড়ায় ১৪৬। এর মধ্যে চলতি জুলাই মাসের ১৮ দিনেই মারা গেছে ৯৯ জন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এ বছর হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা ২৫ হাজার ৭৯২। এর মধ্যে শুধু জুলাই মাসের ১৮ দিনেই ভর্তি হয়েছে ১৭ হাজার ৮১৪ জন। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর মাসওয়ারি হিসাব নিলে দেখা যাবে, গত জানুয়ারিতে ভর্তি হয়েছিল ৫৬৬ জন রোগী, ফেব্রুয়ারিতে ১৬৬ জন, মার্চে ১১১ জন, এপ্রিলে ১৪৩ জন, মে মাসে এক হাজার ৩৬ জন এবং জুন মাসে পাঁচ হাজার ৯৫৬ জন রোগী। এ পরিসংখ্যান অনুযায়ী জুনের তুলনায় জুলাই মাসের ১৮ দিনে ভর্তির সংখ্যা তিনগুণেরও বেশি। মৃত্যুর ক্ষেত্রেও জুলাই মাসের ভয়াবহতার চিত্র পাওয়া যায়। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে জানুয়ারি মাসে মৃত্যু হয়েছে ছয়জনের, ফেব্রুয়ারিতে তিনজনের, এপ্রিল ও মে মাসে দুজন করে। সুতরাং, জুলাই মাসে মৃত্যুর সংখ্যা ভয়ানকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, প্রতি বছরই ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে। এবার বেড়েছে ভয়াবহভাবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধারণত বর্ষাকালে এডিসের প্রাদুর্ভাব বাড়ে; কিন্তু আচরণগত পরিবর্তনের ফলে এটি আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছে। রূপ বা চরিত্র বদলে ফেলায় চলতি বর্ষা মৌসুমে ডেঙ্গুর সংক্রমণ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। এডিস মশার চরিত্র বদলকেই ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধির কারণ বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।