গ্রাহক ছাড়াই হিসাব খুলে জালিয়াতি
ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ময়মনসিংহ জেলার ভালুকায় অবস্থিত সিডস্টোর বাজার শাখায় বগুড়ার একজন মাদ্রাসার শিক্ষকের নামে ভুয়া ব্যাংক হিসাব খোলা হয়। মো. তোফায়েল আহমেদ নামে ওই শিক্ষকের এই ব্যাংক হিসাব খোলেন আনারুল নামে এক ব্যক্তি। পরে এই ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে দীর্ঘদিন লেনদেনও করেন। স্থানীয় ব্যবসায়ী মফিজুল ইসলামের বিশ্বস্ততা অর্জনের পর আনারুল তার পাওনা টাকার বিপরীতে দুটি ব্যাংক চেক দেন। এই চেক ভাঙাতে গেলেই ঘটে বিপত্তি। কারণ ওই ব্যাংক হিসাবে ছিল না কোনো টাকা। এতে নিজের টাকা তুলতে ভালুকা থানায় চেক জালিয়াতির মামলা করেন। আর ওই মামলার আসামি হিসেবে মাদ্রাসা শিক্ষক তোফায়েলের কাছে নোটিস যাওয়ার পর তিনি এই ব্যাংক হিসাব সম্পর্কে জানতে পারেন। ব্যাংক হিসাবের সঙ্গে তার কোনো সংশ্লিষ্টতা না থাকলেও এখন প্রতিনিয়তই মামলার হাজিরা দিতে হচ্ছে অল্প বেতনে চাকরি করা এই শিক্ষককে।
ব্যাংকাররা বলছেন, বর্তমানে ব্যাংক হিসাব খোলার ক্ষেত্রে অনেক ধাপ রয়েছে। চাইলেই কেউ জালিয়াতি করতে পারে না। ঘটনা বিশ্লেষণ করলে এটি স্পষ্ট যে, সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তার যোগসাজশ ছাড়া অন্যজনের এনআইডি ব্যবহার করে ব্যাংক হিসাব খোলা সম্ভব নয়।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও আদালত থেকে প্রাপ্ত তথ্য বলছে, মাদ্রাসা শিক্ষক তোফায়েল আহমেদের বাড়ি বগুড়া জেলার সোনাতলা উপজেলার শালিখা গ্রামে। স্থানীয় একটি কওমি মাদ্রাসায় ৫ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করেন। পাশাপাশি মসজিদের ইমামতিতে পান আরও ৩ হাজার টাকা। তা দিয়েই টেনেটুনে চলে সংসার। হঠাৎ একদিন তারই প্রতিবেশী আনারুল ইসলাম বেশি বেতনে ইমামতির চাকরির অফার নিয়ে আসেন, নিয়ে যান জাতীয় পরিচয়পত্রসহ কিছু কাগজপত্র। ওইসব কাগজপত্র দিয়েই ভুয়া ব্যাংক হিসাব খোলেন প্রতিবেশী আনারুল। আর ওই অ্যাকাউন্টের চেক জালিয়াতির মামলায় ফেঁসে গেছেন মাদ্রাসা শিক্ষক তোফায়েল।
তোফায়েল আহমেদ জানান, চাকরি তো হয়ইনি বরং কিছুদিন পর জানতে পারেন তার বিরুদ্ধে ময়মনসিংহের ভালুকায় চেক জালিয়াতির মামলা হয়েছে। মামলা থেকে রেহাই পেতে দিতে হবে ৮ লাখ টাকা। কিংকর্তব্যবিমূঢ় তোফায়েল প্রতিকার চেয়ে অভিযোগ দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকে। একই সঙ্গে প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন। দুটি মামলার খরচ জোগাতে তার এখন বেহাল অবস্থা।