পাগল ছাড়া দুনিয়া
লেখার শিরোনামে একটা গানের কলি রয়েছে। গানের কথায় বলা হয়েছে, তুই পাগল তোর মনও পাগল, পাগল পাগল করিস না, পাগল ছাড়া দুনিয়া চলে না। বাংলা ভাষায় পাগল শব্দটার ব্যবহার বিচিত্র। মানুষ ভালোবাসার মানুষকে পাগল বলে, পাগলা বা পাগলি ডাকে। রবীন্দ্রনাথের সমাপ্তি গল্পের টমবয় নায়িকাকে পাড়ার লোকে পাগলি ডাকত। রবিঠাকুরের গানেও আছে, ‘যে তোরে পাগল বলে, তারে তুই বলিসনে কিছু’। জয় গোস্বামীর বিখ্যাত কবিতার নাম ‘পাগলী, তোমার সঙ্গে’। এ রকম আরও হাজারো গান কবিতায় পাগল শব্দটা পাওয়া যাবে। বিশেষত প্রেমের গান আর মারফতি গানগুলোতে, খোদার প্রেমে পাগল এবং নরনারীর জৈবিক প্রেমের চোটে পাগল দুটোই প্রচলিত।
কিন্তু বাস্তব জীবনে যারা মানসিক সমস্যায় ভোগেন তাদের কী অবস্থা! স্বীকার করতেই হবে, আমাদের সচেতনতার অভাব আছে। আমরা এখনো মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ডাক্তারের কাছে যাওয়াকে বিলাসিতা মনে করি। আমরা প্রিমিনস্ট্রুয়াল সিনড্রোম তো দূরের কথা, পোস্টপার্টাম ডিপ্রেশনও স্বীকার করি না, টিনএজের হরমোনাল চেঞ্জের কারণে মুড সুইংকে বলি ট্যানট্রামস। এসব তো তবু হরমোনাল বিষয়! যেগুলো মানসিক এবং/অথবা পারস্পরিক সম্পর্ক বিষয়ক জটিলতা, যেমন- রিলেশনশিপ বা ম্যারেজ কাউন্সিলিংকে আমরা হেসে উড়িয়ে দিই। মোট কথা কোনো রকম মানসিক সমস্যা নিয়ে আমরা আলাপ করি না। কেউ ‘কেমন আছো’ জানতে চাইলে ‘পেট খারাপ’ হলে আমরা অনায়াসে বলি, ‘মন খারাপ’ কখনই বলি না।