যে যোদ্ধার অস্ত্র বলপেন
ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগ্রামের প্রতীক গাসসান কানাফানি। শরণার্থী শিবিরে শৈশব কাটানো এই লেখক জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ফিলিস্তিনিদের আন্দোলন করতে উদ্বুদ্ধ করেন। পিএফএলপির এই মুখপাত্র মনে করতেন, কান্নাকাটি করে অধিকার আদায় হয় না, এর জন্য দরকার বিদ্রোহ। লিখেছেন তৃষা বড়ুয়া
গাড়িবোমায় মৃত্যু
১৯৭২ সালের ৮ জুলাই। দিনটি ছিল শনিবার। গরমে অতিষ্ঠ লেবাননের মানুষ। তাই সাপ্তাহিক ছুটির দিনে সকাল থেকেই ভ্যাপসা গরম আর আর্দ্রতা থেকে রেহাই পেতে গ্রামের দিকে রওনা দেন তারা। সে সময় রাজধানী বৈরুতের দক্ষিণ-পূর্বে হাজমিয়ে এলাকায় থাকতেন ফিলিস্তিনি লেখক গাসসান কানাফানি। তিনি সেদিন আর সবার মতো সবুজ গাছপালায় ঘেরা শীতল প্রকৃতিতে ঠাঁই নিতে বেরিয়ে পড়েননি। তার অন্য কাজ ছিল। প্রথমে ১৭ বছরের ভাইঝি লামিজ নাজিমকে নিয়ে বৈরুতের আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে হবে। সেখানে তাকে ভর্তি করাতে হবে। ভর্তির কাজ শেষ হলে কানাফানি যাবেন সাপ্তাহিক আল হাদাফের অফিসে। পত্রিকাটির সম্পাদক তিনি। ফিলিস্তিনি মার্কসবাদী-লেনিনবাদী সংগঠন পপুলার ফ্রন্ট ফর দ্য লিবারেশন অব প্যালেস্টাইন সাপ্তাহিক পত্রিকা আল হাদাফের প্রকাশক। সকাল সাড়ে ১০টা বাজার একটু আগে হঠাৎ গোটা হাজমিয়ে এলাকা বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে ওঠে। কানাফানির গাড়িতে বোমা রাখা ছিল। ভাইঝিকে নিয়ে ধূসর রঙা অস্টিন গাড়িতে ওঠার একটু পরেই বোমাটি বিস্ফোরিত হয়। পাশের এক ভবনের প্রহরী বোমা বিস্ফোরণের শব্দে ঘটনাস্থলে ছুটে যান। গিয়ে দেখেন, লামিজ নাজিমের দেহ গাড়ি থেকে বেশ কয়েক মিটার দূরে পড়ে আছে আর কানাফানির দেহ পুরোপুরিই পুড়ে গেছে।