স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধন এবং এর অর্থনৈতিক প্রভাব পর্যালোচনা
পদ্মা সেতু প্রকল্পের টেন্ডার প্রক্রিয়ায় বিশ্বব্যাংক ‘দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের’ অভিযোগ উত্থাপন করলে বাংলাদেশ সরকার সে অভিযোগ মেনে নেয়নি। ২০১২ সালের ২৮ জুন বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট পদ্মা সেতু প্রকল্পের ঋণ বাতিল করে। বিশ্বব্যাংকসহ অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীদের পদ্মা সেতু প্রকল্পে ফিরিয়ে আনার জন্য অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের নেতৃত্বে অর্থ মন্ত্রণালয় উদ্যোগ গ্রহণ করলে বিশ্বব্যাংক কতিপয় শর্তসাপেক্ষে অর্থায়নে রাজি হয়। সরকার শর্ত পূরণে যথাসাধ্য চেষ্টা করে। পদ্মা সেতু প্রকল্পে নিয়োজিত কতিপয় কর্মকর্তা ও ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলা দায়ের করে এবং আমাকেসহ তিন কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠায়। কিন্তু সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনসহ কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তিকে মামলার আসামি না করায় বিশ্বব্যাংক প্রকল্পের কাজ শুরু করতে গড়িমসি করে। পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজ শুরু করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৩ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বেঁধে দেন। ওই সময়ের মধ্যে বিশ্বব্যাংক প্রকল্পের কাজে ফিরে না আসায় প্রধানমন্ত্রী উন্নয়ন সহযোগীদের ঋণ প্রত্যাখ্যান করে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন।
নিজস্ব অর্থায়নে সেতু নির্মাণের সরকারি সিদ্ধান্ত হলে উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে মিলে আমরা টেন্ডার প্রক্রিয়ার যে পর্যায়ে আসার পর কাজ স্থগিত হয়েছিল, সেতু বিভাগ সেখান থেকে শুরু করে যাবতীয় টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে নির্বাচিত ঠিকাদারদের কার্যাদেশ প্রদান করে। ঠিকাদার প্রাথমিক কার্যাদি সম্পন্ন করে মূল সেতু নির্মাণের কাজ শুরুর প্রাক্কালে প্রধানমন্ত্রী ২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন।