বর্ষা না আসিতেই সর্বনাশা নদীভাঙন শুরু হইয়াছে। সোমবার সমকালের এক প্রতিবেদনে বলা হইয়াছে, ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে বসতভিটা হারাইয়া নিঃস্ব হইয়াছে কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার নয়ারহাট ইউনিয়নের শতাধিক পরিবার। ভাঙনের ঝুঁকিতে রহিয়াছে দক্ষিণ খাউরিয়া বাজার, শতাধিক বসতভিটাসহ বিভিন্ন স্থাপনা। ব্রহ্মপুত্রে বিলীন হইয়া গিয়াছে ইউনিয়নের দক্ষিণ খাউরিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাংশ। ইহাতে অনিশ্চিত হইয়া পড়িয়াছে সাত শতাধিক শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন।
সক্রিয় ব-দ্বীপ হিসাবে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নদীভাঙন অস্বাভাবিক নহে। কিন্তু নির্বিচার বালি উত্তোলনসহ স্বাভাবিক নদীপ্রবাহে নানাবিধ বিঘ্নের পরিণামে প্রায় সমগ্র দেশেই নদীভাঙন সাম্প্রতিক বৎসরগুলিতে বিপজ্জনক মাত্রা পাইয়াছে। কিন্তু ভাঙনপ্রবণ অঞ্চলসমূহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অজানা নহে। অধিকন্তু ইদানীং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি সংস্থা নদীভাঙনের পূর্বাভাসও দিতে শুরু করিয়াছে। তৎসত্ত্বেও নয়ারহাটের ভাঙন প্রতিরোধে অগ্রিম ব্যবস্থা গৃহীত হইল না কেন? প্রতিবেদন অনুসারে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি রক্ষায় ব্যবস্থা লইতে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিগণ বারংবার পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অনুরোধ করিয়াছিলেন। কিন্তু নামমাত্র জিও ব্যাগ ফেলিয়া দায় সারিয়াছে কর্তৃপক্ষ। বাস্তবে নদীভাঙন প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ, তৎসহিত নির্বিচার বালি উত্তোলন বন্ধ করিতেই হইবে। জ্বরের মূল কারণ অনুসন্ধান না করিয়া শুধু তাপমাত্রা হ্রাসকরণের দাওয়াই দিলে ব্যাধি উপশম যদ্রূপ সুদূরপরাহত, নদীভাঙনের ক্ষেত্রেও উহা তদ্রূপ সত্য।
- ট্যাগ:
- মতামত
- শিক্ষা
- শিক্ষার্থী
- নদী ভাঙন