এমএন হুদার পরিকল্পনা কমিশন
ডক্টর এমএন হুদার ‘মাই সেভেন ডিকেড’স জার্নি থ্রু ব্রিটিশ ইন্ডিয়া, পাকিস্তান অ্যান্ড বাংলাদেশ’ স্মৃতিকথায় পূর্ব পাকিস্তান প্ল্যানিং বোর্ড গঠনের প্রবন্ধটি উঠে এসেছে : ১৯৫৬ থেকে ১৯৫৮ পর্যন্ত আতাউর রহমান খান পূর্ব পাকিস্তানের চিফ মিনিস্টার ছিলেন। পাকিস্তান কেন্দ্রীয় সরকারের ইচ্ছের বিরুদ্ধে তিনি প্ল্যানিং বোর্ড ফর ইস্ট পাকিস্তান গঠন করলেন। পূর্ব পাকিস্তানের জন্য একটি প্ল্যানিং বোর্ড দরকার এ নিয়ে তিনি একগুঁয়ে ভূমিকা পালন করে গেছেন। প্রফেসর আবদুর রাজ্জাক (জাতীয় অধ্যাপক) প্রফেসর আবুল ফজল আতোয়ার হোসেন (জাতীয় অধ্যাপক) এবং আমাকে প্ল্যানিং বোর্ডে যোগ দিতে আমন্ত্রণ জানালেন। ডেপুটি চিফ ইকোনমিস্ট পদে ড. মোশাররফ হোসেনও যোগ দিলেন।
আমাদের প্রত্যাশা ছিল- পাকিস্তানের প্রেক্ষাপটে পূর্ব পাকিস্তানের জন্য আঞ্চলিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করা। আমরা যুক্তিসংগত পরিকল্পনা তৈরি করতে চেয়েছি। পূর্ব পাকিস্তানের বদনাম ছিল, বরাদ্দকৃত অর্থ ভালোভাবে খরচ করতে জানে না। অব্যবহৃত অর্থ প্রায়ই কেন্দ্রীয় সরকারের তহবিলে ফেরত পাঠানো হতো। আমাদের লক্ষ্য ছিল এই বদনাম অপনোদন করা এবং পরিকল্পনা অনুযায়ী বরাদ্দকৃত অর্থ বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে ব্যয় করা। পরিকল্পনা অর্থনীতির অংশ না, রাজনীতির অংশ বলা মুশকিল। আসলে দুটোরই অংশ। পরিকল্পনা, রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার অংশ। এই সম্পৃক্ততায় সম্ভবত আমিই অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলাম। ১৯৫৮’র অক্টোবরে করাচিতে ন্যাশনাল ইকোনমিক কাউন্সিলের বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। তাতে যোগ দেওয়ার জন্য পূর্ব পাকিস্তানে চিফ মিনিস্টার সেখানেই ছিলেন। দুদিন পর আমাদের তার সঙ্গে যোগ দেওয়ার কথা। আমরা করাচির উদ্দেশ্যে যাত্রা করতে যাব এমন সময় সামরিক আইন ঘোষিত হলো। স্পষ্টত সেখানে গিয়ে আর কাজ নেই। বৈঠক বাতিল হলো। চিফ মিনিস্টার আতাউর রহমান খান করাচিতেই রয়ে গেলেন।
- ট্যাগ:
- মতামত
- পরিকল্পনা কমিশন