বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রস্তুত করে বসে আছে রিলায়েন্স
নারায়ণগঞ্জের মেঘনাঘাটে নির্মাণাধীন বৃহৎ গ্যাসভিত্তিক তিনটি প্রকল্পের একটি রিলায়েন্স মেঘনাঘাট ৭১৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রকল্প। এ প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে ৯৪ শতাংশ। বাকি আছে শুধু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পরীক্ষামূলক ও কমিশনিং কার্যক্রম। এজন্য ব্যাক ফিড (কাজ শুরুর জন্য প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ সংযোগ) ও গ্যাস সরবরাহ দরকার। বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি প্রস্তুত অবস্থায় থাকলেও গ্যাস সংকটের কারণে এখনই এটি চালু করা যাচ্ছে না বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে।
যদিও প্রকল্পসংশ্লিষ্টদের আনুষ্ঠানিক বক্তব্য হলো সাময়িক গ্যাস সংযোগ দিয়ে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি পরীক্ষামূলক উৎপাদনে আনা যাবে। কিন্তু গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত না হওয়ায় এখন বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি সময়মতো বা পূর্ণ সক্ষমতায় চালু করা নিয়েও রয়েছে বড় ধরনের সংশয়।
রিলায়েন্স মেঘনাঘাট ৭১৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণে মোট ব্যয় হচ্ছে প্রায় ১০০ কোটি ডলার। ভারতীয় প্রতিষ্ঠান রিলায়েন্স পাওয়ার বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির মূল উদ্যোক্তা হলেও চালুর কিছুদিনের মধ্যে এর বৃহৎ মালিকানা চলে যাবে টোকিওভিত্তিক জ্বালানি খাতের প্রতিষ্ঠান জাপান’স এনার্জি ফর আ নিউ এরার (জেরা) কাছে। প্রকল্পে জেরার মালিকানা এখন ৪৯ শতাংশ।
রিলায়েন্সের বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাওয়ার কথা ছিল ২০২২ সালের আগস্টে। তবে তা বিলম্বিত হয় কভিডের কারণে। চলতি বছরের মধ্যে এটি উৎপাদনে যাওয়ার কথা রয়েছে। যদিও এতে গ্যাস সরবরাহের উৎস বা উপায় নিয়ে স্পষ্ট কোনো তথ্য দিতে পারছে না বিদ্যুৎ বা জ্বালানি বিভাগ।
বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সম্পৃক্ত হতে ২০১৫ সালের মাঝামাঝিতে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব জমা দেয় রিলায়েন্স পাওয়ার লিমিটেড। অনিল আম্বানির মালিকানাধীন কোম্পানিটির পক্ষ থেকে দেয়া এ প্রস্তাবে ৩ হাজার মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের কথা বলা হয়। এসব প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৬ সালে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে প্রথম পর্যায়ে বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের অনুমোদন পায় কোম্পানিটি। শুরুতেই ৭১৮ মেগাওয়াট সক্ষমতার গ্যাসভিত্তিক কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন এবং এলএনজি টার্মিনাল স্থাপনের অনুমোদন পায় রিলায়েন্স। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) সঙ্গে নারায়ণগঞ্জের মেঘনাঘাটে জমি ইজারা ও বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি করে রিলায়েন্স পাওয়ার। তিতাস গ্যাসের সঙ্গে গ্যাস সরবরাহ চুক্তিও করে কোম্পানিটি।