ইসি কেন সরকারের পক্ষে সাফাই গাইছে
গত বছর নির্বাচন কমিশন আরপিওর ১৭টি ধারা সংশোধনের লক্ষ্যে আইন মন্ত্রণালয়ে একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছিল, যার মূল লক্ষ্য ছিল কমিশনের ক্ষমতা বৃদ্ধি করা। এ উদ্যোগের পরিপ্রেক্ষিতে আমি প্রথম আলোয় (৩০ আগস্ট ২০২২) প্রকাশিত এক উপসম্পাদকীয়তে দাবি করেছিলাম, উচ্চ আদালতের রায়ের সুবাদে যে ক্ষমতা কমিশনের ইতিমধ্যে আছে, তার জন্য ‘আইন মন্ত্রণালয়ের দ্বারস্থ হওয়াটা আত্মঘাতী হতে পারে—মন্ত্রণালয় কমিশনের প্রেরিত প্রস্তাবটি নাকচ করে দিতে পারে।’
বাস্তবে ঘটেছেও তা-ই। কিন্তু এর প্রতিবাদ না করে, কমিশন যেন সরকারের পক্ষে সাফাই গাইছে। কমিশনের একজন সদস্য রাশেদা সুলতানা সম্প্রতি দাবি করেছেন, ‘আরপিও সংশোধনে ইসির ক্ষমতা খর্ব নয়, বরং কিছুটা বাড়বে’ (প্রথম আলো, ২১ মে ২০২৩)। আইনমন্ত্রী কর্তৃক সংসদে উত্থাপিত বিলের পর্যালোচনা থেকে সব অভিজ্ঞ পর্যবেক্ষক কমিটির ক্ষমতা খর্ব করার আশঙ্কা প্রকাশ করলেও কমিশনের এমন বক্তব্য থেকে প্রতিষ্ঠানটি আসলে সরকারের বি-টিম কি না, তা নিয়ে সন্দেহের উদ্রেক না করে পারে না।
কমিশনার রাশেদা সুলতানার বক্তব্য অনুযায়ী, কমিশন ৯১ (ক) ধারায় কোনো পরিবর্তনের প্রস্তাব করেনি। বিদ্যমান ৯১ (ক) ধারায় বলা আছে, ‘৯১। ভিন্নরূপ কোনো বিধান না থাকিলে, কমিশন—(ক) যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, নির্বাচনে বল প্রয়োগ, ভীতি প্রদর্শন, চাপ সৃষ্টিসহ বিভিন্ন বিরাজমান অপকর্মের কারণে যুক্তিযুক্ত, ন্যায়সংগত এবং আইনানুগভাবে নির্বাচন পরিচালনা নিশ্চিত করিতে সক্ষম হইবেন না, তাহা হইলে ইহা যেকোনো ভোটকেন্দ্র বা ক্ষেত্রমতো, সম্পূর্ণ নির্বাচনী এলাকায় নির্বাচনের যেকোনো পর্যায়ে ভোট গ্রহণসহ নির্বাচনী কার্যক্রম বন্ধ করিতে পারিবে।’ মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত প্রস্তাবে ‘নির্বাচন’ শব্দের পরিবর্তে ‘ভোট গ্রহণ’ শব্দ প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। আপাতদৃষ্টে এটি শব্দগত পরিবর্তন মনে হলেও এর ব্যাপকতা অনেক গভীরে।