রক্তপিপাসা ও লবিস্ট সম্প্রদায়
১২ জুন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ নামের এনজিও একটি আর্টিকেল ছাপিয়েছে তাদের নিজস্ব পোর্টালে, যেটি লিখেছেন ওই এনজিওরই ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ফর অ্যাডভোকেসি ব্রুনো স্টাগনো উগার্তে। সেই লেখায় জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জ্যাঁ পিয়েরে ল্যাক্রোর আসন্ন বাংলাদেশ সফরের আগে তাকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, তিনি যেন বাংলাদেশে গিয়ে রোহিঙ্গাদের হয়রানি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গুম হয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের হুমকি-নিরাপত্তা ও বিরোধী দলের প্রতি দমনপীড়নের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। ব্রুনো আর্টিকেলে যা বলেছেন তার অর্থ হলো, এই বিষয়গুলো বন্ধ না হলে যেন জাতিসংঘের শান্তি মিশনে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের না নেওয়া হয়। তিনি অভিযোগ করেছেন, বাংলাদেশের পুলিশ, র্যাব চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে।
এখন একটা একটা করে বিষয় আসি। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ব্যাপারে ইংরেজি শব্দটি ব্যবহার করেছে ‘হ্যারাসিং’ অর্থাৎ হয়রানি করা হচ্ছে। সত্যিই কি তাই? বাংলাদেশ সরকার বা বাংলাদেশের মানুষ কি রোহিঙ্গাদের হয়রানি করছে? প্রকৃত সত্য হলো, অনেক দেশ ও এনজিওর মতো হিউম্যান রাইটস ওয়াচের বক্তব্য হলো রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো যাবে না। বাংলাদেশ সরকার মে মাসের প্রথম সপ্তাহে মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে আলোচনার পর একটি পাইলট প্রকল্প হাতে নেয় ১১শ রোহিঙ্গাকে তাদের নিজস্ব ভিটায় ফেরত পাঠানোর। আর এটাকেই তারা হয়রানি বলছে! কথায় কথা আসে। ৪০টির ওপর এনজিও রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিয়ে কাজ করছে। তাদের উচ্চপর্যায়ের কর্মীরা আন্তর্জাতিক ডলারে রাজকীয় জীবনযাপন করছে। খোঁজ নিয়ে জেনেছি, এমন অনেকগুলো পাঁচ তারকা হোটেল রয়েছে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে, যেগুলোর স্যুট মাসের পর মাস বুকিং করা থাকে একেকজন কর্মকর্তার নামে। দেখা যায় হয়তো দেড় মাস ধরে তিনি নেই, কিন্তু পাঁচ তারকা হোটেলে রুমটি বুকিং করা আছে লাখ লাখ টাকায়! এই লোভনীয় কাজ কেউ ছাড়তে চায়! তাই প্রায় প্রতিটি এনজিও চায়, কোনোক্রমেই যেন রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে দেওয়া না হয়। বলার অপেক্ষা রাখে না, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ তাদের মধ্যে অন্যতম।