যুদ্ধাপরাধে প্রশ্নবিদ্ধ জামায়াত
বিচার না হওয়া পর্যন্ত জামায়াতকে দোষী বলতে নারাজ আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। স্বাধীনতাবিরোধী, যুদ্ধাপরাধী, ধর্ষণকারী, লুটপাটকারী, অগ্নিসংযোগকারী ইত্যাদি বিশেষণে বিশেষায়িত করা দলটি সম্পর্কে কেন এখন এমন মতিগতি সরকারি মহলের? জামায়াত কি তবে বিএনপির সঙ্গ ছেড়ে সরকারি হেফাজতে হিজরত করেছে? কেন জামায়াত এখন আর স্বাধীনতাবিরোধী নয়? জঙ্গি অপশক্তিও নয়? এসব প্রশ্নকে নিষ্পত্তিহীন রেখে টানা ১০ বছর পর ঢাকায় বীরদর্পে সমাবেশ করেছে দলটি। তাও আচমকা বা চোরাগুপ্তা নয়, পুলিশের অনুমতি নিয়ে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিশাল আয়োজনে।
কেয়ারটেকার সরকার, রাজনৈতিক নেতা ও আলেমদের মুক্তিসহ ৩ দাবিতে ৩ ঘণ্টারও বেশি সময় চলা সমাবেশে নেতারা গরম বক্তৃতায় কমতি করেননি। সমাবেশ শেষে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যদের হাতে ফুল দিয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবির কর্মীরা। তাদের বাদাম চিবানোসহ সহাবস্থান কিছুটা সিনেমেটিকও। কদিন আগেও যাদের তাড়া করেছে এই পুলিশই। ২০১২ সালে যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরুর পর থেকে জামায়াত রাজনৈতিকভাবে কোণঠাসা। তার ওপর ইসিতে নিবন্ধন বাতিল হয়ে যাওয়ার পর কোনো নির্বাচনে দলীয়ভাবে অংশ নিতে পারেনি দলটি। গত ১০ বছরের বেশি সময় ধরে ঢাকার মগবাজারে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় বন্ধ। চলমান রাজনীতির মাঠে জামায়াতের সমাবেশটির মধ্যে বিশ্লেষণের আরও অনেক উপাদান। নিবন্ধন ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানাতে গিয়ে জামায়াত নেতারা বলেছেন, তাদের নিবন্ধনটি ‘ছিনিয়ে’ নেওয়া হয়েছে। ছিনিয়ে নেওয়া শব্দটির ব্যবহারও এখানে ইঙ্গিতবহ। ২০১৩ সালের ১ আগস্ট জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল ও অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয় হাইকোর্ট। ২০১৮ সালের ৮ ডিসেম্বর দলটির নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।