শিশুশ্রম বন্ধ কি শুধু সেমিনারের বিষয় হয়েই থাকবে?
প্রতিবছর ১২ জুন ‘শিশুশ্রমবিরোধী দিবস’ হিসেবে পালিত হয়। ১৪ বছরের কম বয়সীদের দিয়ে কাজ না করিয়ে তাদের শিক্ষার সুযোগ করে দেওয়ার লক্ষ্যেই দিনটি পালিত হয়।
শিশুশ্রম বন্ধ করার প্রসঙ্গে সচেতনতার জন্য দিনটি পালন করা হয়। অনেক শিশু আছে যারা কম বয়সে শৈশব হারিয়ে ফেলে। লক্ষ করলে দেখা যাবে, অনেক শিশু আছে যারা রেলস্টেশনে, কলকারখানায়, চায়ের দোকানে, রাস্তার ধারের ছোটখাটো দোকানে কিংবা বাসাবাড়িতে শিশুদের কম মজুরিতে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত থাকতে দেখা যায়। তারা অর্থ রোজগার করতে গিয়ে পড়াশোনার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়। এমন শিশুকে রক্ষা করাই হলো আজকের দিনের উদ্দেশ্য।
জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদ অনুযায়ী, একটি শিশুকেও তার জীবিকা নির্বাহের জন্য কোনো প্রকার শ্রমে নিয়োজিত করা যাবে না। কিন্তু বাংলাদেশের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে শিশুরা শ্রমে জড়িত হয়ে থাকে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ২০০৩ সালের হিসাব অনুযায়ী দেশে ৫ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিশুশ্রমিকের সংখ্যা ৩২ লাখ। এর মধ্যে ১৩ লাখ শিশু ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত। একটি জরিপে দেখা গেছে, এসব শিশুশ্রমিকের প্রায় ৫০ শতাংশ শিশু পরিবারের আয়ের প্রধান উৎস।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা এবং ইউনিসেফ পরিচালিত জরিপ অনুযায়ী দেশের শহরাঞ্চলে প্রায় ৩০০ ধরনের অর্থনৈতিক কাজে শিশুরা শ্রম দিচ্ছে। এক সমীক্ষায় ৭০৯টি কারখানার মধ্যে জরিপ চালিয়ে দেখা যায়, মোট ৯ হাজার ১৯৪ জন শ্রমিকের মধ্যে ৪১.৫ শতাংশ অর্থাৎ ৩ হাজার ৮২০ শিশু। এই শিশুশ্রমিকদের অধিকাংশেরই বয়স ১০ থেকে ১২ বছরের মধ্যে। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানেই মানা হচ্ছে না শ্রম আইন।