পাথরগুলো এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যায় কীভাবে
পৃথিবীর সবচেয়ে উষ্ণ ও শুকনো জায়গাগুলোর একটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডেথ ভ্যালি। বছরে দুই ইঞ্চিরও কম বৃষ্টিপাত হয় এখানকার ঊষর জমিতে। বুঝতেই পারছেন জায়গাটায় মানুষের পক্ষে বাস করা কঠিন। তার পরও ডেথ ভ্যালি ন্যাশনাল পার্কে কাজ করেন এ রকম কিছু মানুষ ও পর্যটকদের জন্য যে কয়েকটি হোটেল আছে, সেগুলোর কর্মচারীরা থাকেন এখানে। এ ছাড়া আসেন পর্যটকেরা। আর এখানে দেখা মেলে গরমের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে এমন কিছু বন্যপ্রাণীর।
ডেথ ভ্যালির সবচেয়ে বড় আকর্ষণগুলোর একটি জীবিত কোনো প্রাণী নয়, বরং পাথর। এগুলোর দেখা পেতে হলে আপনাকে যেতে হবে রেইসট্র্যাক প্লায়ায়। ডেথ ভ্যালি ন্যাশনাল পার্কের ফার্নেস ক্রিক ভিজিটর সেন্টার থেকে মোটামুটি ৮০ মাইল পথ পেরোতে হবে গাড়িতে চেপে। তবেই পৌঁছে যাবেন মোটামুটি মাইল তিনেক লম্বা রেইসট্র্যাক প্লায়ায়। আশ্চর্যজনক হলেও এখানকার পাথরগুলো জায়গা বদলায়, মানে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় সরে যায়।
আবার এগুলো যে একেবারে ছোট পাথর, তা-ও নয়। কখনো কখনো এ ধরনের পাথরের ওজন ২০০ কেজির বেশিও হয়। এগুলো যে খুব আস্তে-ধীরে জায়গা বদলায় তা নয়। এ ধরনের কোনো কোনো পাথর এক মিনিটে ১৫ ফুট পর্যন্ত চলে যায়। এভাবে ১০০০ ফুট পর্যন্ত দূরে যাওয়ার ঘটনাও ঘটে। তবে সমস্যা হলো, কেউ এদের নড়তে বা চলাচল করতে দেখার বিষয়টি একেবারেই বিরল। তাই বিষয়টা নিয়ে রহস্য ডালপালা মেলতে থাকে।
রেইসট্র্যাক প্লায়ায় এমন কয়েক ডজন পাথরের দেখা পেতে পারেন। একেবারে কম্পিউটারের মাউসের আকারের পাথর থেকে মাইক্রোওয়েভ বা তারও বড় আকারের পাথরও পাবেন। প্রতিটিই বালুর ওপর দেখবেন ট্রেইল রেখে গেছে। কোনোটা সোজা, কেবল কয়েক ফুট লম্বা। কোনোটা আবার একটা ফুটবল মাঠের সমান দূরত্ব পেরিয়েছে, সেটা সোজা না গিয়ে হয়তো হালকা বাঁক কিংবা কড়া মোচর নিয়েছে।
এই পাথরগুলোর এভাবে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাওয়ার কারণে এদের নাম হয়ে গেছে সেইলিং স্টোন। আজ থেকে ১০০ বছরেরও বেশি আগে প্রথম এসব পাথরের ব্যাপারে জানতে পারে মানুষ। সালটা ১৯১৫ সালে এ ধরনের পাথরের দেখা পাওয়ার প্রথম ঘটনা ঘটে। জোসেফ ক্রুক নামের একজন খনিজ সন্ধানী জাতীয় উদ্যানের রেইসট্র্যাক পায়া এলাকায় যান খনিজ অনুসন্ধানে। এ সময়ই যা দেখলেন তাতে রীতিমতো স্তম্ভিত হয়ে যান।
- ট্যাগ:
- জটিল
- পাথর
- স্থানান্তর