চোখ রাঙাচ্ছে ডেঙ্গু, করোনাও ঊর্ধ্বমুখী
কয়েকদিন ধরে প্রতিদিনের বাংলাদেশসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে ডেঙ্গু নিয়ে বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদনগুলো থেকে জানা গেছে, প্রতিরোধের কার্যকর উদ্যোগ না থাকায় জেলা-উপজেলা পর্যায়েও ছড়িয়ে পড়ছে ডেঙ্গু। টেকনাফে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ডেঙ্গু থাবা বসিয়েছে। একই সঙ্গে ৩ জুন একটি দৈনিকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনার সংক্রমণও দেখা দিয়েছে এবং ৬৬ দিন পর ২ জুন দেশে দুজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। একদিকে তীব্র দাবদাহ, অন্যদিকে বিদ্যুৎ-পানির সংকট বিদ্যমান পরিস্থিতিতে ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জনস্বাস্থ্যের সুরক্ষার জন্য এই পরিস্থিতি অনুকূল নয়। এ বছর ডেঙ্গুর ঝুঁকি বাড়বেÑ এমন আশঙ্কার কথা জনস্বাস্থ্যবিদরা আরও আগে থেকেই বলে আসছিলেন। শেষ পর্যন্ত স্বাস্থ্যমন্ত্রীও যা বললেন তা কোনোভাবেই স্বস্তির নয়। ২৯ মে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, দেশে গত বছরের তুলনায় কয়েকগুণ ডেঙ্গু রোগী বেড়েছে।
ডেঙ্গুর মৌসুম এখনও শুরু হয়নি। আমরা জানি, বর্ষাকালে সাধারণত ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ে। কিন্তু এবার ডেঙ্গু অকালেই বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ৩০ মে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ, ২৯ মে পর্যন্ত প্রায় দুই হাজার ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে ১৩ জনের মৃত্যু সংবাদও পাওয়া গেছে। ৪ জুন প্রতিদিনের বাংলাদেশ-এর অনলাইন সংস্করণে বলা হয়েছে, ৩ জুন একদিনে আরও তিনজনের প্রাণহানি ঘটেছে। অকালে ডেঙ্গুর চোখ রাঙানোর পাশাপাশি করোনার সংক্রমণ পরিস্থিতি বাড়তি উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা জানি, ২০২০ সালের ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্তের ঘোষণা দেয় সরকার। আর করোনায় প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে ওই মাসের ১৮ তারিখ। তারপর পর্যায়ক্রমে দফায় দফায় কী ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল তা দুঃসহ স্মৃতি হয়ে আছে। এখন করোনা শনাক্তের যে ঊর্ধ্বগতি দেখা যাচ্ছে তা জুলাই পর্যন্ত চলতে পারে বলে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা অভিমত দিয়েছেন। করোনাভাইরাসের কারণে জারি করা বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা গত মাসে প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। আমাদের দেশে করোনার বিধিনিষেধ তুলে না নেওয়া হলেও বাস্তবে এর কোনো কিছু অনেক দিন ধরেই দৃশ্যমান নয়। এখন যে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে তাতে মনে হয়, জনসচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি আমাদের পুরোনো অভ্যাসে ফিরে যাওয়া উচিত।