জেলেদের টিকে থাকাই দায়
বছরে ৩৬৫ দিনের মধ্যে ১৫৭ দিন সমুদ্রে ইলিশ শিকার করতে পারেন উপকূলের জেলেরা। বাকি ২০৮ দিন অলস সময় কাটাতে হয়। নিষেধাজ্ঞার সময়ে কেউ ঘরে বসে থাকেন, কেউ আড্ডা দিয়ে সময় কাটান। এই সময়ে আয়-রোজগার বন্ধ থাকায় পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর দিন কাটান। অনেকে ধারদেনায় জর্জরিত। এ অবস্থায় জেলেদের টিকে থাকাই এখন দায়।
জেলেরা বলছেন, নিষেধাজ্ঞার সময়ে ঘরে বসে থাকায় নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এর মধ্যে রয়েছেন জেলে, ঘাট শ্রমিক, ট্রলার মালিক, আড়তদার ও মৎস্য ব্যবসায়ী। বছরের পর বছর ঋণগ্রস্ত থাকায় কেউ কেউ পেশা ছেড়ে দিচ্ছেন।
কয়েকজন জেলে ও মাঝির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মৎস্য সম্পদের সুরক্ষা ও মাছের বংশবিস্তারে সাগরে মাছ ধরার ওপর ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। এরপর ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রজনন মৌসুমে ২২ দিন নিষেধাজ্ঞা দেয় মৎস্য অধিদফতর। সেইসঙ্গে আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় বছরে গড়ে ৪৫ দিন সমুদ্রে যেতে পারেন না জেলেরা। নিষেধাজ্ঞার ৮৭ ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে ৪৫ দিনসহ ১৩২ দিন বাদে জেলেরা মাছ ধরার সুযোগ পান সাত মাস সাত দিন।
ট্রলার মালিক ও জেলেদের ভাষ্য অনুযায়ী, মাসে দুই বার সাগরে মাছ ধরতে যান জেলেরা। প্রতিবার মাছ ধরা শেষে ঘাটে ফিরে বিক্রি করতে সময় লাগে তিন-চার দিন। হিসাবে একটি ট্রলার মাসে সাত-আট দিন ঘাটে থাকে। মাছ ধরার নির্ধারিত সময় সাত মাসের মধ্যে ৫৬ দিন কেটে যায় ঘাটে। এ ছাড়া প্রতিটি ট্রলার তিন মাস পরপর মেরামত করতে হয়। প্রতিবার মেরামতে সময় লাগে পাঁচ দিন। এতে বছরে চারবারে সময় যায় ২০ দিন। সবমিলিয়ে বছরে ২০৮ দিন সমুদ্রে যেতে পারেন না। বাকি ১৫৭ দিন সাগরে গেলেও সবসময় ইলিশ পাওয়া যায় না। এতে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন কলাপাড়া উপকূলের জেলেরা।