বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুসারে, প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী তামাক চাষের জমির পরিমাণ বাড়ছে। বাংলাদেশের অবস্থা তথৈবচ। এখানেও কৃষক অনেক জায়গায় অন্য ফসলের পরিবর্তে চাষ করছেন তামাক। এ কারণে একদিকে কমছে ধান, গম, সরিষা, ভুট্টা, আলুসহ বিভিন্ন ধরনের শাকসবজির চাষ; অন্যদিকে তামাক চাষে অধিক পরিমাণে কীটনাশক ও সার ব্যবহারের কারণে মাটির ক্ষয় বেশি হয়। এভাবে তামাক বিশ্বব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তায়ও ঝুঁকি তৈরি করছে। সে কারণেই এ বছর বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবসের প্রতিপাদ্য– তামাক নয়, খাদ্য ফলান। বলা বাহুল্য, তামাক চাষ পরিবেশেরও ক্ষতি করে। তা ছাড়া তামাক সেবনের মাধ্যমে ব্যক্তি নিজে যেমন ঘাতক ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়, তেমনি অন্যরাও সমানভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
উদ্বেগজনক পরিসংখ্যান হলো, তামাক ব্যবহারে দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষে বাংলাদেশ। সমীক্ষা বলছে, ধূমপায়ীর মধ্যে ২ কোটি ২০ লাখই গুল-জর্দাসহ ধোঁয়াবিহীন তামাক ব্যবহারকারী। বিভিন্নভাবে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হন আরও ৩ কোটি ৮৪ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ। তামাকের কারণে বছরে প্রায় ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ মারা যান। মৃত্যুর নেপথ্যে তামাক পাতা পোড়ানো নিকোটিন বিষের সঙ্গে জড়িয়ে আছে ৮ হাজার রাসায়নিক পদার্থের সঙ্গে ৭০টি ক্যান্সার সৃষ্টিকারী জীবাণু। তামাক পাতা পুড়িয়ে ধূমপানের কারণে ধীরে ধীরে মানবদেহের হৃৎপিণ্ড, লিভার, ফুসফুস আক্রান্ত হয়। ফলে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, ব্রঙ্কাইটিস এমনকি মুখগহ্বরে ক্যান্সারের মতো মারাত্মক ঘাতক ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়।