মার্কিন ভিসানীতি: স্বস্তি-অস্বস্তি
একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন নিশ্চিত করতে ঘোষিত মার্কিন নতুন ভিসা নীতি বাংলাদেশের রাজনীতিতে রীতিমতো সাইক্লোন বইয়ে দিয়েছে। দৃশ্যত সবাই মার্কিন ভিসা নীতিকে স্বাগত জানিয়েছেন। কারণ মার্কিন চাওয়ার সাথে সরকারি দল, বিরোধী দল, নাগরিক সমাজ- কারও চাওয়ারই অমিল নেই।
অন্তত মুখে সবাই একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চায়। তবে মুখে স্বাগত জানালেও অস্বস্তি আছে সব মহলেই। প্রথমে নাগরিক সমাজ বা সুশীল সমাজের অস্বস্তির কথাটা বলে নেই। রাজনীতিবিদরা নিজেদের সুবিধামতো বিদেশি শক্তির কাছে ধরনা দিলেও নাগরিক সমাজ বা সাধারণ মানুষ সবসময়ই বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিদেশি হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে।
সাধারণ মানুষের এ আবেগের কথাটা রাজনীতিবিদদের অজানা নয়। তাই তারা যতই ধরনা দিক, মুখে বিদেশি হস্তক্ষেপের সমালোচনা করে। কিন্তু বাংলাদেশের প্রধান তিন রাজনৈতিক দল- আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি, নতুন ভিসা নীতি ঘোষণার পরদিনই মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সাথে বৈঠক করে এসেছেন। বৈঠকে তারা নতুন ভিসা নীতিকে স্বাগতই জানিয়েছেন।
সাধারণ মানুষও দেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চায়। কিন্তু সেটা যদি আমরা নিজেরাই নিশ্চিত করতে পারতাম, তাহলেই সবচেয়ে ভালো হতো। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলোর পারস্পরিক অবিশ্বাস, সন্দেহের কারণে সে সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। সে কারণেই বিদেশি হস্তক্ষেপ অনিবার্য হয়ে উঠেছে। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে বাংলাদেশের গণতন্ত্র আর তাদের ভিসাকে সমান্তরাল করে তুলেছে; তা অস্বস্তিকর, অপমানজনক, দুঃখজনক। ব্যর্থতাটা রাজনীতিবিদদের, কিন্তু অপমানটা সবার।