ভাড়া চাইতেই বললেন, ‘আমি পুলিশ’
মাস দেড়েক আগের ঘটনা। বাসে যাচ্ছিলাম বনশ্রী থেকে কাকরাইল। কন্ডাক্টর ভাড়া চাইতে এলে আমার সামনের সিটে বসা এক ভদ্রলোক বললেন, ‘আমি পুলিশ।’ কন্ডাক্টর ছেলেটি উষ্মা প্রকাশ করে বলল, ‘এক গাড়িতে যদি আপনেরাই চাইরজন ফিরি (ফ্রি) যান, তাইলে আমরা চলুম ক্যামনে?’ ভদ্রলোক চুপচাপ। কন্ডাক্টর ছেলেটি আমার কাছে ভাড়া চাইতেই বললাম, ‘আমি ভাড়া দিব না, কারণ আমি সাংবাদিক।’ ছেলেটি ফ্যালফ্যাল করে আমার দিকে তাকিয়ে রইল।
বললাম, ‘দেখো তোমরা পুলিশকে ভয় পাও, তাই তারা ভাড়া দেয় না। পুলিশ তো আবার আমাদের, মানে সংবাদিকদের ভয় পায়। তাহলে আমি ভাড়া দেব কেন?’ ছেলেটিকে ভাড়া মিটিয়ে দিয়ে ওই ভদ্রলোককে বললাম, ‘ভাই, আপনি পুলিশ বলে বাসভাড়া দেবেন না, এটা কেমন কথা? পুলিশদের বাসভাড়া দিতে হবে না এমন কোনো আইন কি দেশে আছে?’ ভদ্রলোক কোনো কথা বলছিলেন না। প্রতিপক্ষ সরব না হলে বাগ্যুদ্ধ জমে না, তাই ক্ষান্ত দিলাম। পাশের ভদ্রলোক বললেন, ‘এমনটিই চলছে। কেউ প্রতিবাদ করে না। করে লাভও নেই।
উল্টো নাজেহাল হতে হয়। আপনি সাংবাদিক, তাই পারলেন। সাধারণ মানুষ এত কথা বললে খবর আছিল।’যাঁরা ঢাকার রাস্তায় গণপরিবহনে চলাফেরা করেন, তাঁরা এ ধরনের দৃশ্য হরহামেশাই দেখে থাকবেন। নির্দিষ্ট স্থানে বাস কোম্পানির চেকার ওঠেন।
তাঁরা কতজন যাত্রী, তাঁদের মধ্যে কতজন শিক্ষার্থী—এসব একটি বিলে টুকে দেন; যেটাকে ওয়েবিল বলে। আজকাল অনেক চেকিং পোস্টে কন্ডাক্টরকে গলা উঁচিয়ে সুপারভাইজারের উদ্দেশে বলতে শোনা যায়, ‘পুলিশ পাস এতজন।’ কেউ যদি আমার এ অভিজ্ঞতার কথা বিশ্বাস করতে না চান, তাহলে তাঁকে গণপরিবহন, মানে বাস-মিনিবাসে যাতায়াত করার অনুরোধ করছি। চাইলে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও ছদ্মবেশে বিষয়টি তদন্ত করে দেখতে পারেন।
- ট্যাগ:
- মতামত
- পুলিশ
- বাস ভাড়া
- গণপরিবহনের ভাড়া