স্বাস্থ্য খাতে খামখেয়ালিপনার শেষ কোথায়
করোনা মহামারির পরও দেশের স্বাস্থ্য খাতে খামখেয়ালিপনা বন্ধ হয়নি। বরং দিন দিন হঠকারী সিদ্ধান্ত বেড়েই চলেছে। উদ্দেশ্য ভালো হওয়া সত্ত্বেও দূরদর্শিতার অভাব এবং বিজ্ঞানভিত্তিক তথ্য-উপাত্ত ব্যবহার না করে সিদ্ধান্ত গ্রহণের কারণে এ খাত আজ চরম সংকটে। এখানে খামখেয়ালিপনার কিছু চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
হরেদরে মেডিকেল কলেজের সংখ্যা বৃদ্ধি এই খাতের খামখেয়ালিপনার বড় উদাহরণ। সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজের সংখ্যা দিন দিন ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি এবং প্রয়োজনীয় অবকাঠামো তৈরি না করে কিংবা উপযুক্তসংখ্যক শিক্ষকের সংস্থান না করে নতুন মেডিকেল কলেজে পাঠদান চালু করার যে প্রবণতা চলছে, তাকে একটি ‘রোগ’ বলা যেতে পারে।
এখনো মানের বিবেচনায় আমাদের সিনিয়র এবং মধ্যম সারির চিকিৎসকেরা উন্নত বিশ্বের চিকিৎসকদের সমতুল্য, ক্ষেত্রবিশেষে এগিয়েও আছেন। কিন্তু নামসর্বস্ব মেডিকেল কলেজের স্নাতকেরা যখন চিকিৎসকের জায়গায় উপবিষ্ট হবেন, তখন রোগীর পক্ষে হাসপাতালে না গিয়ে বাড়িতে বিনা চিকিৎসায় থাকাই বেশি নিরাপদ হবে বলে মনে হচ্ছে।
এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের সুযোগ এখনো কিছুটা আছে। প্রথমটি, থাইল্যান্ডের মতো মেডিকেল এবং ডেন্টাল স্নাতকদের বিএমডিসির যোগ্যতা যাচাই পরীক্ষায় পাসের সাপেক্ষে প্র্যাকটিস করার অনুমোদন ও নবায়ন ব্যবস্থা চালু করা।
দ্বিতীয়টি, যেসব সরকারি মেডিকেল কলেজে এখন পর্যন্ত প্রয়োজনীয় অবকাঠামো তৈরি হয়নি এবং উপযুক্ত শিক্ষকের সংস্থান করা যায়নি, সেখান থেকে শিক্ষার্থীদের পার্শ্ববর্তী মেডিকেল কলেজে যেখানে এ ধরনের সংকট নেই, সেখানে স্থানান্তর করা এবং এ সংকট দূর না করা পর্যন্ত শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ রাখা। পাশাপাশি যেসব বেসরকারি মেডিকেল কলেজে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো এবং উপযুক্ত শিক্ষকের সংস্থান নেই, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট অনুমোদনকারী বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিএমডিসির সমন্বয়ে গঠিত একটি শক্তিশালী কমিটির মাধ্যমে যাচাই–বাছাই সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ।
সবচেয়ে বেশি দরকার যেটি, সেটি হলো সরকারি কিংবা বেসরকারি পর্যায়ে আর কোনো নতুন মেডিকেল কলেজের অনুমোদন না দেওয়া।
- ট্যাগ:
- মতামত
- স্বাস্থ্য খাত
- খামখেয়ালিপনা