বিএনপির আন্দোলনের হিসাবে নতুন গরমিল
রাজনীতির মাঠে কাছাকাছি সময়ে দুটো সংবাদ মিলল। প্রথমটি, আবারও আন্দোলন কর্মসূচির কথা ভাবছে বিএনপি। উদ্দেশ্য– সরকারের পদত্যাগসহ ১০ দফা দাবি আদায়। দ্বিতীয়টি, গণঅধিকার পরিষদ আচমকা গণতন্ত্র মঞ্চ নামের জোট ত্যাগের ঘোষণা দিয়েছে। দুটি ঘটনাই নতুন বিচার-বিশ্লেষণের দাবি রাখে। বিএনপি, গণতন্ত্র মঞ্চ ও গণঅধিকার পরিষদ– সবাই যখন সরকারবিরোধী, তখন এই অনৈক্যের কারণ কী? বিএনপি কি শেষ পর্যন্ত সরকারবিরোধী আন্দোলনে সফল হবে? গণঅধিকার পরিষদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎই বা কী?
গণঅধিকার পরিষদের সিদ্ধান্ত আন্দোলনে বিভাজন সৃষ্টি করবে? স্তিমিত করে দেবে প্রতিবাদের মনোভাব? শেষ পর্যন্ত গণঅধিকার পরিষদ কি সরকারবিরোধী আন্দোলনে থাকবে? এসব প্রশ্নের উত্তর জানার জন্য আরও অপেক্ষা করতে হবে। একই সঙ্গে বিভিন্ন ঘটনা সতর্কতার সঙ্গে বিচার-বিশ্লেষণও জরুরি।
গত ডিসেম্বরে পল্টনে সমাবেশ করা থেকে পিছু হটার পর বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচির মাধ্যমে বিএনপি আবারও নেতাকর্মীকে জাগিয়ে তোলার চেষ্টা করছে। এর আগে বিভাগীয় সমাবেশ করে বেশ সাড়া ফেলেছিল দলটি। ওই সমাবেশগুলোতে জনসমাগম ছিল চোখে পড়ার মতো। দলীয় নেতাকর্মী ছাড়াও সাধারণ সমর্থক বিশেষত নিম্নবর্গের মানুষ হেঁটে, সাইকেলে, নৌকায় করে সমাবেশগুলোতে যোগ দিয়েছিল। কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে বিএনপির ১৭ নেতাকর্মী পুলিশের গুলিতে নিহতও হলো। তাদের বেশিরভাগই ছিল দিনমজুর ও খেটে খাওয়া। ফলে, দেখা যাচ্ছে বিএনপির সমাবেশগুলোর মাধ্যমে নতুন করে রাজনীতির শ্রেণিবিন্যাস ঘটছে। আর্থিক দুরবস্থা, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বেকারত্ব, দুর্নীতি, লুটপাটের কারণে নিম্নবর্গের মানুষ সরকারবিরোধী আন্দোলনে যোগ দিচ্ছে। সব মজলুম, নির্যাতিত ও বঞ্চিত এক মঞ্চে এসে উপস্থিত হতে চাইছে। যদিও বিএনপি এসব মানুষের জন্য বিশেষ কোনো কর্মসূচি দিতে পারেনি; আন্দোলনের সেই গতি ধরেও রাখতে পারেনি।