এ সময়ের লাবণ্য-কেতকী
‘ফ্যাশন হলো মুখোশ আর স্টাইল হলো মুখশ্রী।’ শেষের কবিতায় রবীন্দ্রনাথ হয়তো এটাই বলতে চেয়েছিলেন। ফ্যাশন মানে সময়ের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেওয়া বা উপযোগী করে সাজানো। অন্যদিকে স্টাইল হলো, নিজের স্বভাবসিদ্ধ ব্যাপারটাই যখন আপনাআপনি সাজপোশাকে ফুটে ওঠে; যে রুচিবোধে ব্যক্তিমানুষ হয়ে ওঠে স্পষ্ট।
‘শেষের কবিতা’ উপন্যাসটি একটানা পড়লে বোঝা যায়, লাবণ্য ও কেতকী রুচি, পোশাক-আশাক এবং ব্যক্তিত্বের দিক থেকে একেবারেই দুই ঘরানার মানুষ। কলকাতাবাসী কেতকী বা কেটি মিত্র শহুরে ও পাশ্চাত্য ধাঁচের জীবনযাপন, সাজসজ্জা এবং পোশাক-আশাকে অভ্যস্ত। এককথায় তার ‘পশ’ লুকটাই ভেসে ওঠে আমাদের চোখের সামনে। অন্যদিকে শিলংয়ের অধিবাসী লাবণ্যর অবয়ব আমরা গড়ে নিই পরিপাটি, কম প্রসাধন, সাধারণ ও স্নিগ্ধতার মিশ্রণে। এ তো গেল বইয়ের ভাঁজে মোড়ানো লাবণ্য-কেতকীর কথা। সে-ও অনেক আগের কথা; ব্রিটিশ শাসিত ভারতের বাঙালি দুই নারী তারা।
এখন চলছে ২০২৩ সাল। সেই সময়কার ফ্যাব্রিকস, ব্লাউজের কাটিং, গয়নার কাঁচামাল ও নকশার জনপ্রিয়তা, হেয়ারস্টাইল—সবই যুগ অনুযায়ী বদলেছে। তবে এখনো কেউ হয়তো কেটি মিত্রের মতো ট্রেন্ডি লুকেই দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন শহর। আবার কারও সাজপোশাক ও কাজলের রেখায় খুঁজে পাওয়া যায় লাবণ্যর শান্ত-স্নিগ্ধ প্রতিমা। আশপাশে নজর বুলিয়ে নিলে টের পাবেন, কেউবা লাবণ্যর মতো, কেউবা কেতকীর মতো হেঁটে বেড়াচ্ছেন আপনার কাছাকাছিই। দুজনের ফ্যাশন স্টেটমেন্টকে জেনে-বুঝে কিংবা অজ্ঞাতসারে সাদরে গ্রহণ করছেন এ সময়ের তরুণীরা। বদলে যাওয়া যুগের লাবণ্য-কেতকীর ফ্যাশন ও স্টাইলের গল্প বলতেই এত কথা বলা।
- ট্যাগ:
- লাইফ
- লাইফস্টাইল
- ফ্যাশন
- হেয়ারস্টাইল