অন্তরে আজ দেখব
ঈশ্বরকে চেনার জন্য যেমন গুরুর প্রয়োজন পড়ে রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে সামান্য ধারণা পাওয়ার জন্যও তার অন্তরঙ্গ অনুগামীদের লেখায় চোখ রাখতে হয়। তারা কেউ রাজনীতিবিদ ছিলেন না তাই তাদের লেখা পড়ে অন্ধের হস্তীদর্শন হয় না। আসুন, শান্তিদেব ঘোষ-এর ‘রবীন্দ্রসঙ্গীত বিচিত্রা’য় একটু চোখ রাখি।
বইটির ১৬১ পৃষ্ঠায় শান্তিদেব ঘোষ লিখছেন—“তারিখহীন গানগুলির রচনাকাল, রচনার উপলক্ষ এবং বাংলা ভাঙা গানের মূল হিন্দিগুলি কোন গুণী শিল্পীর কাছ থেকে সংগ্রহ করেছিলেন, সব খবর পাওয়া যাচ্ছে পৃষ্ঠার পারম্পর্য এবং কতগুলি সমসাময়িক তথ্যের দ্বারা। গানগুলিকে সময়ানুযায়ী সাজিয়ে তালিকা করার পর ১২৯৮ থেকে ১৩০১ সাল পর্যন্ত প্রথম গুচ্ছের যে ক’টি গান পাচ্ছি তা হলো—
১। শুধু যাওয়া আসা
২। খাঁচার পাখী ছিল সোনার খাঁচাটিতে
৩। আমার মন মানে না দিনরজনী…”
১৯৩-১৯৪ পৃষ্ঠায় শান্তিদেব ঘোষ আর একটি তালিকা দিচ্ছেন, ‘হিন্দি-ভাঙা বাঙলা গান ও মূল হিন্দি গান’-এর, যার মধ্যে পাচ্ছি…
“১। শীতল তব পদ ছায়া, তাপহরণ
‘বাঙ্গুরি মোরি মূর গেঁয়ি জিন ছুঁয়ো।’
২। নিশিদিন জাগিয়া আছ নাথ হে।–
‘ঠাকুরিয়া অঁচরা মোরে ছাড়ি দে।’
ইত্যাদি গান…”
এরপর ২২৩ পৃষ্ঠায় পাচ্ছি, “আশ্বিনের ১৩ তারিখে রেলপথে রচিত ‘এ কি সত্য সকলি সত্য’ গানটির পর তারিখহীন যে পাঁচটি গান পাচ্ছি, তার চারটি হলো পূজা পর্যায়ের হিন্দি-ভাঙা গান, একটি স্বদেশ পর্যায়ের। প্রথমটি ‘নিত্য সত্যচিন্তন করো রে বিমল হৃদয়ে।’ মূল গানটি রচনা করেছিলেন বিহারের সঙ্গীতরসিক জমিদার ‘মহারাজা আনন্দ কিশোর’।