পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায়
হরমোনের (Prostaglandins) প্রভাবে জরায়ুর মাংসপেশির সংকোচন হওয়ার ফলে মেয়েদের মাসিকের সময় ব্যথা অনুভব হয়। অনেকের মাসিকের সময় অল্পস্বল্প পেটে ব্যথা হতে পারে। কিন্তু মাঝেমধ্যে অনেক বেশি ব্যথা হয়। ব্যথার কারণে দৈনন্দিন কাজকর্ম করা যায় না, স্কুল-কলেজ যাওয়া বন্ধ রাখতে হয়। সাধারণত ১৬-২৪ বছরের মেয়েরা এ সমস্যায় বেশি ভোগেন। হরমোনের সমস্যা, মানসিক চাপ, বেকারত্ব, ডিম্বাশয়ে চকলেট সিস্ট বা পেলভিক ইনফ্লামেটরি ডিজিজ, জরায়ু টিউমার ও জন্মগত জরায়ু সমস্যার কারণে এমন ব্যথা হতে পারে। ব্যথা অনেক সময় এত বেশি হয় যে রোগীকে খুব বিমর্ষ দেখায়।
পিরিয়ডের ব্যথা সাধারণত কোথায় হয়
কোমরের পেছনের দিক থেকে শুরু হয়। তলপেটে হয়ে থাকে সাধারণত। অনেকের ব্যথা হয় ঊরুতে। কারও আবার পিঠে মেরুদণ্ডের নিচের দিকেও দেখা যায়। ব্যথার সঙ্গে কারও কারও মাথাব্যথা, কোমরব্যথা বা বমি হতে পারে। স্কুলগামী মেয়েদের এটি বেশি হয়। ব্যায়াম করা, পুষ্টিকর খাবার, মানসিক চাপমুক্ত এবং মিনিস্ট্রুয়াল হাইজিন এ সমস্যা অনেক কমাতে পারে। ঋতুস্রাব বা মাসিক মেয়েদের নিয়মিত শারীরিক পরিবর্তন। এটি কোনো রোগ নয়। এটি একটি স্বাভাবিক শারীরিক প্রক্রিয়া। তবে মাসিকের সময় মেয়েদের তলপেট, বুকে ব্যথা অনুভূত হয়। বমি বমি ভাব এবং ক্ষুধামান্দ্য দেখা দেয়। অনেকের মাসিক শুরু হওয়ার আগে শুরু হয়। কারও আবার চালাকালীন সময়েও থাকে।
পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর জন্য করণীয়
- পেটে গরম পানির সেঁক।
- ভিটামিন ই, বি১, বি৬, সি-জাতীয় খাবার। যেমন : চীনাবাদাম, পোস্তবাদাম, আম, কলা, আপেল, মাছ, ডিম, গম, সবুজ সবজি এই খাবারগুলো মাংসপেশির সংকোচন কমিয়ে ব্যথা কমাবে।
- গরম পানিতে কোমর ডুবিয়ে ২০ থেকে ২৪ মিনিট বসে থাকলে উপকার পাবেন।
শরীর ম্যাসাজ
- বেশি ব্যথা হলে ব্যথা কমানোর ওষুধ, হরমোনের ওষুধ এবং অনেক সময় জরায়ু বা ডিম্বাশয়ের অস্ত্রোপচার লাগতে পারে।
- ব্যথা কমানোর জন্য চধৎধপবঃধসড়ষ-জাতীয় ওষুধ (তবে যেকোনো ওষুধ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নেওয়া ভালো)।
- পরিমিত পানি পান।
- ফল ও শাকসবজি খাওয়া।
- যদি এ ব্যথা এবং রক্তক্ষরণ বেশি হয়, তবে ডাক্তারের সঙ্গে আলাপ করে প্রয়োজনীয় পরামর্শ নিতে হবে।
পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়
- ব্যথা কমানোর আরেকটি কার্যকর উপাদান হলো ল্যাভেন্ডার তেল। এই তেল ব্যথার সময় কয়েক ফোঁটা পেটে দিয়ে হালকা হাতে ম্যাসাজ করুন। ব্যথা তাড়াতাড়ি কমে যাবে।
- আদা এই ব্যথা কমাতে ভীষণভাবে সাহায্য করে। শুধু ব্যথা নয়, অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যা থেকে মুক্তি দিতেও সাহায্য করে আদা। তাই এ সময় ফুটন্ত গরম পানিতে আদা গ্রেট করে সেই ফোটানো পানিতে একটু মধু ও একটু লেবুর রস দিয়ে সেটি খেতে পারেন দিনে দুই থেকে তিনবার। ব্যথা থেকে উপকার পাবেন। আদা দেওয়া খাবারও বেশি করে খেতে পারেন।
- এক কাপ গরম পানিতে দুই থেকে তিন চামচ তুলসীর রস মিশিয়ে খেলে উপকার পাবেন। দিনে দুবার খেতে হবে। চাইলে কাঁচা তুলসী পাতাও খেতে পারেন।
- মাসিকের সময় কফি বা কফি-জাতীয় খাবার না খাওয়াই ভালো। এর কারণ হলো কফিতে থাকা ক্যাফেইন। এই উপাদানটি পেটের ভেতর অস্বস্তির অনুভব তৈরি করে। এর ফলে শরীরে অস্বস্তি হয়।