প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়নে আর কত কালক্ষেপণ

বণিক বার্তা ড. মইনুল ইসলাম প্রকাশিত: ১৯ এপ্রিল ২০২৩, ০৯:৫৯

প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্পটি আবার স্থবির হয়ে পড়েছে। ২০২৩ সালের শুষ্ক মৌসুমেও তিস্তা প্রকল্প প্রস্তাবটি একনেকে উপস্থাপিত না হওয়ায় নিশ্চিত হওয়া গেল যে ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় সংসদ নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ সরকার এ ব্যাপারে আর কোনো পদক্ষেপ নেবে না। বহুদিন ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় তোলপাড় করা একটি খবর ছিল প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্পটি চূড়ান্তভাবে প্রস্তুত হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও একটি দেশের আপত্তির মুখে সেটি অনুমোদনের জন্য একনেকে উপস্থাপন করা হচ্ছে না। ২০২২ সালে একটি খবর সরকারি মহল থেকেই প্রচার করা হয়েছিল যে ওই আপত্তি সত্ত্বেও ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে তিস্তা প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। কিন্তু এরপর দীর্ঘদিন সরকারি পক্ষের আর কোনো নড়াচড়া পরিলক্ষিত হচ্ছিল না। 


প্রায় পাঁচ বছর আগে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ প্রকল্প প্রণয়নে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে অনুরোধ জানিয়েছিলেন, যাতে ‘চীনের দুঃখ’ হিসেবে একদা বিশ্বে বহুল পরিচিত হোয়াংহো নদী বা ইয়েলো রিভারকে চীন যেভাবে ‘চীনের আশীর্বাদে’ পরিণত করেছে ওই একই কায়দায় বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোর জনগণের জন্য প্রতি বছর সর্বনাশ ডেকে আনা তিস্তা নদীর পানি ব্যবস্থাপনাকেও একটি বহুমুখী প্রকল্পের মাধ্যমে আধুনিকায়ন করা যায়। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধে সাড়া দিয়ে সম্পূর্ণ চীনা অর্থায়নে প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্পের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নের পর প্রকল্প প্রস্তাবটি চীনের পক্ষ থেকে বেশ কয়েক বছর আগে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। চীন প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বাংলাদেশকে ঋণ প্রদানের প্রস্তাব দেয়, বাংলাদেশও ওই প্রস্তাব গ্রহণ করে। প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্পে বাংলাদেশের সীমানার ভেতর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা নদীর ১১৫ কিলোমিটারে ব্যাপক খনন চালিয়ে নদীর মাঝখানের গভীরতাকে ১০ মিটারে বাড়িয়ে ফেলা হবে এবং নদীর প্রশস্ততাকে ব্যাপকভাবে কমিয়ে ফেলা হবে। একই সঙ্গে রিভার ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে ব্যাপক ভূমি উদ্ধার করে চাষাবাদের সুযোগ সৃষ্টি করা হবে। নদীর দুই তীর বরাবর ১১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের চার লেনের সড়ক নির্মাণ করা হবে। উপযুক্ত স্থানে বেশ কয়েকটি ব্যারাজ-কাম-রোড নির্মাণ করে নদীর দুই তীরের যোগাযোগ নিশ্চিত করার পাশাপাশি বর্ষাকালে প্রবাহিত নদীর বিপুল উদ্বৃত্ত জলরাশি সংরক্ষণে জলাধার সৃষ্টি করে সেচখাল খননের মাধ্যমে নদীর উভয় তীরের এলাকার চাষযোগ্য জমিতে শুষ্ক মৌসুমে সেচের ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। উপরন্তু নদীর উভয় তীরের সড়কের পাশে ব্যাপক শিল্পায়ন ও নগরায়ন সুবিধাদি গড়ে তোলা হবে। ইন্টারনেটে প্রস্তাবিত প্রকল্পটির বর্ণনা জেনে মনে হয়েছে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে সত্যি সত্যিই তিস্তা প্রকল্প বাংলাদেশের সবচেয়ে দারিদ্র্যপীড়িত উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোর জনজীবনে একটা যুগান্তকারী বিপ্লব ঘটাতে সমর্থ হবে। আমি প্রকল্প প্রস্তাবের অনুমোদন প্রক্রিয়ার অগ্রগতি সেজন্যই অত্যন্ত আগ্রহসহকারে পর্যবেক্ষণ করছিলাম। (অবশ্য একদল বিশেষজ্ঞ তিস্তা প্রকল্প দীর্ঘমেয়াদে ফলপ্রসূ হবে না বলে মত ব্যক্ত করে চলেছে)। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ও সচিব এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান ইন্টারনেটের বিভিন্ন প্রতিবেদনে আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন যে ২০২০ সালের ডিসেম্বর নাগাদ প্রকল্পটির অনুমোদন হয়ে যাবে। কিন্তু খবর নিয়ে জানা গেল এ প্রকল্পে বাগড়া দিচ্ছে ভারত। এ প্রকল্পে চীনের অংশগ্রহণকে তাদের দেশের নিরাপত্তার জন্য বিপজ্জনক ঘোষণা করে বাংলাদেশকে প্রকল্প বাতিল করার জন্য সরাসরি চাপ দিয়ে চলেছে। বাংলাদেশকে এ প্রকল্প থেকে সরে আসতে বলা হচ্ছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও