কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

জাতিসংঘ, ইইউ ও কমনওয়েলথকে পাশে চায় বিএনপি

www.ajkerpatrika.com মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী প্রকাশিত: ১২ এপ্রিল ২০২৩, ২০:০৫

বিএনপি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন নির্বাচনের দাবিতে দেশের অভ্যন্তরে নানা নামের, নানা জোটকে একত্র করার পাশাপাশি বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার সমর্থনও আদায় করে নিতে চাইছে। এ উপলক্ষে বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে তাদের খোলামেলা এবং রুদ্ধদ্বার বেশ কয়েকটি বৈঠকের খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশনার, মার্কিন রাষ্ট্রদূত এবং ইইউর রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গেও তাদের একাধিক বৈঠকের কথা জানা গেছে। কোন দেশ তাদের দাবির প্রতি কী ধরনের সমর্থন ব্যক্ত করেছে, তা জানা সম্ভব নয়। তবে নির্দলীয় সরকার ছাড়া বিএনপি নির্বাচনে যাবে না, বর্তমান সরকারের অধীন অনুষ্ঠিত কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না—এই বক্তব্য তারা সব রাষ্ট্রদূতকেই বলেছে বলে নেতাদের বক্তব্য থেকে জানা গেছে। সর্বশেষ বিএনপি জাতিসংঘ, ইইউ সদস্যভুক্ত দেশ ও কমনওয়েলথ সংস্থার নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে চিঠি লিখে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যৌক্তিকতা এবং ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে তাদের ও সরকারের অবস্থান সম্পর্কে তাদের মতো করে প্রমাণপত্র দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলেও গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনের ধারণার এটি অধিকতর সম্প্রসারণ বলা চলে; অর্থাৎ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন শক্তিকেও তারা তাদের আন্দোলনের ব্যাপারে সমর্থন প্রদানে অংশীজন করতে চাইছে।


বাংলাদেশে নির্বাচন নিয়ে আগেও কমনওয়েলথ এবং জাতিসংঘের সাহায্য চাওয়া হয়েছিল। ১৯৯৪ সালে প্রথম নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রবর্তন, তথা রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনে কমনওয়েলথ মহাসচিবের বিশেষ দূত স্যার নিনিয়ান স্টিফেন ঢাকায় সরকারি ও বিরোধী দলের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন। তৎকালীন সরকারি দল বিএনপি কোনো অবস্থাতেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নিতে রাজি না হওয়ায় আলোচনা ব্যর্থ হয়। স্যার নিনিয়ান চলে যান। ২০১১ সালে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা অগণতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিক হিসেবে রোহিত হওয়ার কারণে বিএনপি ও জামায়াত পরবর্তী নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে আপত্তি ও সংশয় প্রকাশ করতে থাকে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তখন খালেদা জিয়ার সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সংসদে নির্বাচিত সদস্যদের নিয়ে একটি নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থা গঠন করার জন্য পরামর্শ করতে বৈঠকের আহ্বান করেছিলেন। এই উদ্যোগে বিরোধী দল সাড়া দেয়নি, আপত্তি জানায়, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার দাবি জানায়।


সেই সময় পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুনের পরামর্শে জাতিসংঘের রাজনীতিবিষয়ক সহকারী মহাসচিব অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকো ঢাকায় আসেন। উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনা হয়, সমঝোতা হয় হয় করেও না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত তারানকো চলে যান। কমনওয়েলথ এবং জাতিসংঘের দুই উদ্যোগই ব্যর্থ হয়ে যায়। এখন বিএনপি আগের দুই সংস্থার সঙ্গে ইইউকে অন্তর্ভুক্ত করে বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য চাপ সৃষ্টি করতে তিন সংস্থার কাছেই চিঠি লিখছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি যখন প্রথম করা হয়েছিল, তখন সাধারণ মানুষেরও ধারণা ছিল যে নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থাটি নির্দলীয় ব্যক্তিদের দ্বারা গঠিত হলে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন সম্ভব হতে পারে। দেশে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের অভিজ্ঞতা দলীয় সরকারের অধীনে সুখকর হয়নি বলেই এমনটি ছিল। শেষ পর্যন্ত ১৯৯৬ সালের নানা ঘোলাটে রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং অচলাবস্থার কারণে বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার একটি অনুচ্ছেদ সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করে ক্ষমতা থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়।


তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অভিজ্ঞতা প্রথম কিছুটা স্বস্তিদায়ক হলেও ক্রমেই তা সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের আকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থ হতে থাকে; বিশেষ করে ২০০৬ সালে দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন নিয়ে বিদায়ী জোট সরকারের চরম হস্তক্ষেপ সবাই প্রত্যক্ষ করেছে। সেটি আর তত্ত্বাবধায়ক চরিত্রে থাকেনি, চারজন উপদেষ্টা সেই সরকার থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। নির্বাচন কমিশনও ছিল সম্পূর্ণ আজ্ঞাবাহী। দেশ ভয়াবহ এক বিপর্যয়ের দিকে চলে যাচ্ছিল। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে বাস্তবতার ভয়ানক অমিল তখন ঘটে। নির্বাচন অনুষ্ঠানে ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদের সরকার সব অনিয়ম নির্বিচারে ঘটাতে থাকে। দেশে এক-এগারোর মতো ক্ষমতা পরিবর্তনের পরিস্থিতি তৈরি করা হয়। আরেকটি নামমাত্র তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় এলেও সেই সরকারের পেছনে ছিলে সামরিক ও সুশীল সমাজের একটি অংশের সমর্থন। দেশে বিরাজনীতিকরণের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা, সরকারের মধ্যেও বিরোধ এবং কয়েকজনের অপসারণ, যা রাষ্ট্রব্যবস্থাকে ভয়াবহ সংকটের দিকে ঠেলে দিচ্ছিল। দেশের অভ্যন্তরে রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সব মহলের সঙ্গে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীও দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠানের চাপ দিতে থাকে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও