শত্রুর সঙ্গেও মানবিক আচরণের শিক্ষা দেয় বদর বিজয়
রমজান মাসেই ইসলামের বড় বড় সফলতা এসেছে। সেগুলোর অন্যতম হলো ঐতিহাসিক বদরের বিজয়। হিজরতের দ্বিতীয় বছর ১৭ রমজান বদর যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এ বছরই মুসলমানদের দুটি ঈদ ‘ঈদুল ফিতর’ ও ‘ঈদুল আজহা’ প্রথম উদ্যাপিত হয়।
বদরের বিজয়ের ১৩ দিন পর হিজরি দ্বিতীয় বর্ষে দশম মাসের প্রথম তারিখ (১ শাওয়াল) ঈদুল ফিতর বা রোজার ঈদ পালিত হয় এবং মদিনার বনু কাইনুকা নামের একটি ইহুদি সুদখোর মহাজন সম্প্রদায়কে পরাজিত করার পর দ্বিতীয় হিজরি সনের দশম মাসে (১০ জিলহজ) প্রথম ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ উদ্যাপন করা হয়।
বিশ্বমানবতার মুক্তির দূত হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর নবুয়ত ও রিসালাতের ঘোষণা প্রকাশ হয় রমজান মাসেই। পবিত্র কোরআন প্রথম নাজিল হয় রমজান মাসেই।
প্রিয় নবীজি (সা.) সব সময় সত্য, সুন্দর ও ন্যায়ের দাওয়াত দিয়েছেন অহিংস পন্থায়। তারপরও কুফর শক্তি শান্তির বাণী প্রচারে বিঘ্ন সৃষ্টি করে। মুশরিক সম্প্রদায় আল্লাহর হাবিব (সা.)-কে প্রায় তিন বছর ‘শিআবে আবু তালেব’ নামক স্থানে সপরিবার বন্দী করে রাখে।
প্রিয় নবী (সা.) দাওয়াতি কাজে তায়েফ গেলে তারা তাঁকে পাশবিক নির্যাতনে জর্জরিত করেছিল। তিনি মক্কায় ফিরে আসতে চাইলে মক্কায় প্রবেশে তারা বাধা দেয়। ‘দারুণ নাদওয়া’য় তারা তাঁকে হত্যার ষড়যন্ত্র করে। এসব বাধাবিপত্তির মুখে ৬২৩ খ্রিষ্টাব্দে রবিউল আউয়াল মাসে নবুয়তের ১৩তম বছরে আল্লাহর নির্দেশে মহানবী (সা.) প্রিয় জন্মভূমি মক্কা থেকে হিজরত করে মদিনায় চলে যান।
মদিনাবাসী শান্তিকামী ও নিরীহ জনগণ। খাজরাজ বংশীয় পৌত্তলিক নেতা আবদুল্লাহ ইবনে উবাই ইবনে সলুলের জন্য নবনির্মিত স্বর্ণমুকুটটি নবীজি (সা.)-এর পদপ্রান্তে উৎসর্গ করেন তাঁরা। নবীজি (সা.) সে মুকুট মাথায় ধারণ না করে তা বিক্রি করে দুস্থদের মধ্যে বিলিয়ে দেন।
মুকুট হারানোর বেদনায় প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে ওঠেন মুনাফিক নেতা আবদুল্লাহ ইবনে উবাই ইবনে সালুল। তাঁরই প্ররোচনায় মুনাফিক চক্রের ষড়যন্ত্রে এবং মদিনার মৈত্রী চুক্তি ভঙ্গকারী ইহুদি ও খ্রিষ্টানদের গোপন মদদে মক্কার কুরাইশ পৌত্তলিকেরা হিজরতের দ্বিতীয় বছরে ৬২৪ খ্রিষ্টাব্দে রমজান মাসেই মদিনা আক্রমণ করে।
- ট্যাগ:
- মতামত
- বদরের যুদ্ধ
- মাহে রমজান