স্বপ্ন পুড়েছে আগুনে, দুঃস্বপ্ন এখন ঋণের বোঝা
‘বঙ্গে আমার দোকান তো সবগুলোই পুড়েছে। পাশাপাশি এনেক্সকো টাওয়ার মার্কেটের পাঁচতলায় একটি গোডাউনে ৮০ লাখ টাকার মাল ছিল, তাও পুড়ে গেছে। ঈদ উপলক্ষে পরিচিতদের কাছ থেকে ৭০ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলাম। ’
মঙ্গলবার বিকেলে বঙ্গবাজারের বিপরীত পাশে বঙ্গ ইসলামিয়া মার্কেটের নিচে একটি দোকানের সিঁড়িতে বসে ফোনে কোনো এক স্বজনের সঙ্গে এসব কথাই বলছিলেন ব্যবসায়ী মোহাম্মদ তসলিম মিয়া। তার বাসা পুরান ঢাকার আগামাছি লেনে। সকাল সাড়ে ছয়টায় তিনি আগুন লাগার খবর শুনতে পান।
তসলিম মিয়া গতরাতেই ঢাকা সুপার মার্কেটের দোতলায় তার তিন দোকানে মাল তুলেছিলেন। সবই পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। তিনি একটি দোকানের মালামালও রক্ষা করতে পারেননি।
তসলিম মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, ‘আর কিছুই নাই। সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এক টাকার মালও বের করতে পারিনি। রোজার দিনে ৭০ টাকা পকেটে নিয়ে ঘুরতেছি। এখনো রোজা ভাঙি নাই। বাসা থেকে বের হইয়া আইছি। দোয়া কইরেন ভাই। ’
তিনি বলেন, ‘ঈদে পরিচিতজনদের কাছে চাইলেই ঋণ পাওয়া যেত। কারণ তারাও জানেন ঈদ উপলক্ষে ভালো ব্যবসা হয়। এ বছর ভেবেছিলাম ঈদে ভালো বেচাকেনা হবে। ব্যবসা করে নিজেও লাভ করব এবং ঋণও পরিশোধ করব। কিন্তু এখন আমার সবকিছুই শেষ। ’
বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তসলিম মিয়ার মতো সবকিছু হারিয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন অনেক ব্যবসায়ী। আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে তারা ব্যাংক বা পরিচিতজনদের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে তাদের ব্যবসা পরিচালনা করছিলেন। ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন ছিল তাদের চোখে। কিন্তু সব হারিয়ে এখন নিঃস্ব। তাদের শুধু দোকানই পুড়ে যায়নি, পুড়েছে স্বপ্নও।
ঘটনাস্থলে কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান তাদের অসহায়ত্বের কথা। বঙ্গবাজারের পাশে এনেক্সকো টাওয়ারে শাড়ি ও লেহেঙ্গার দোকান ছিল মো মোখলেস মিয়ার। তার পাঁচটি দোকানের মধ্যে শুধু এই দোকানের মালই তিনি রক্ষা করতে পেরেছেন। বঙ্গবাজার মার্কেটে মোকলেস বস্ত্র বিতান নামে তার বাকি চার দোকানই পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। গত রাতেও অনেক নতুন মাল দোকানে উঠিয়েছিলেন বলেন জানান তিনি।