সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যেসব সংস্কার প্রয়োজন

প্রথম আলো বদিউল আলম মজুমদার প্রকাশিত: ০৪ এপ্রিল ২০২৩, ১৫:০৩

সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রতিটি ধাপই সঠিক হওয়া আবশ্যক, তা না হলে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয় না। আর প্রতিটি নির্বাচনী ধাপের গ্রহণযোগ্যতা নির্ভর করে কতগুলো সুনির্দিষ্ট মানদণ্ডের ওপর।


সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের গুরুত্বপূর্ণ মানদণ্ডগুলো হলো: ১. সব রাজনৈতিক দলের জন্য সমসুযোগ সৃষ্টি করতে পারে, এমন একটি আইনি কাঠামো থাকা, ২. ভোটার তালিকা প্রস্তুতকরণ প্রক্রিয়ায় যাঁরা ভোটার হওয়ার যোগ্য, তাঁদের ভোটার হতে পারা; ৩. যাঁরা প্রার্থী হতে আগ্রহী, তাঁদের প্রার্থী হতে পারা; ৪. ভোটারদের সামনে বিশ্বাসযোগ্য বিকল্প প্রার্থী থাকা; ৫. নির্বাচনী এলাকার সীমানা কতগুলো মানদণ্ডের ভিত্তিতে সঠিকভাবে নির্ধারিত হওয়া; ৬. জেনে-শুনে-বুঝে সঠিকভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য প্রার্থীদের সম্পর্কে ভোটারদের সামনে যথাযথ তথ্য থাকা; ৭. ভোটারদের ভয়ভীতির ঊর্ধ্বে উঠে স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারা; ৮. অর্থ কিংবা সহিংসতার মাধ্যমে ভোটারদের প্রভাবিত করার অপচেষ্টা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকা; ৯. ভোট গণনা সঠিকভাবে হওয়া; ১০. নির্বাচনী বিরোধ দ্রুততার সঙ্গে নিরপেক্ষভাবে মীমাংসিত হওয়া; সর্বোপরি ১১. ভোট গ্রহণের প্রক্রিয়া স্বচ্ছ, কারসাজিমুক্ত ও বিশ্বাসযোগ্য হওয়া।


এসব মানদণ্ড পূরণের জন্য গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ (আরপিও)-তে অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়। ড. এ টি এম শামসুল হুদার নেতৃত্বে গঠিত নির্বাচন কমিশন একগুচ্ছ সংস্কার প্রস্তাব রাজনৈতিক দল ও অন্যান্য অংশীজনের মতামত নিয়ে আইনে পরিণত করে। কিছু শর্ত সাপেক্ষে নির্বাচন কমিশনের অধীনে রাজনৈতিক দলের বাধ্যতামূলক নিবন্ধন, সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের যোগ্যতার মাপকাঠিকে কঠোরতা আরোপ, প্রার্থীদের হলফনামার মাধ্যমে তথ্য প্রদানের বিধান, রাজনৈতিক দলের সর্বস্তরের কমিটিতে এক-তৃতীয়াংশ নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতকরণ ইত্যাদি ছিল উল্লেখযোগ্য সংস্কার।


গত এক দশকে নির্বাচনী আইনে আর কোনো উল্লেখযোগ্য সংস্কার হয়নি। তবে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে নির্বাচন কমিশন আরপিওর ১৭টি ধারা সংশোধনের একটি প্রস্তাবনা আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ের জন্য পাঠায়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো রাজনৈতিক দলের সর্বস্তরের কমিটিতে এক-তৃতীয়াংশ নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার বিধানের নবায়ন; প্রার্থীর এজেন্টদের ভয়ভীতি দেখালে বা কেন্দ্রে যেতে বাধা দিলে শাস্তির বিধান রাখা; ভোট বন্ধে প্রিসাইডিং কর্মকর্তার ক্ষমতা বাড়ানো; ভোট বাতিলে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা বৃদ্ধি; প্রার্থীদের টিন সার্টিফিকেট ও আয়কর প্রদানের প্রত্যয়নপত্র দেওয়া বাধ্যতামূলক করা; ভোট গণনার বিবরণ প্রার্থী ও প্রার্থীর এজেন্টদের দেওয়া বাধ্যতামূলক করা ইত্যাদি।


এসব প্রস্তাবের মধ্যে মাত্র একটি, রাজনৈতিক দলের সব কমিটিতে ২০৩০ সালের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার প্রস্তাবটি গুরুত্বপূর্ণ বলে আমরা মনে করি। বাকিগুলোর বিধান আইনে বা আদালতের রায়ে রয়েছে এবং কমিশন এগুলো ব্যবহারও করে আসছে। তাই এগুলো আরপিওতে অন্তর্ভুক্ত করা আনুষ্ঠানিকতামাত্র।


উদাহরণস্বরূপ, বর্তমানে আরপিওর ৪৪ক(২) ধারায় আয়কর রিটার্ন প্রদানের বিধান রয়েছে। কোনো ব্যক্তি বলপূর্বক নির্বাচনী কর্মকর্তাদের স্বাভাবিক নির্বাচনী কর্মকাল পরিচালনার ক্ষেত্রে বাধা প্রদান করলে তাৎক্ষণিকভাবে নির্দিষ্ট কেন্দ্র, এমনকি পুরো নির্বাচনী এলাকার ভোট গ্রহণ বন্ধ করার ক্ষমতা নির্বাচনী কর্মকর্তাদের রয়েছে এবং তাঁরা তা প্রয়োগও করে আসছেন।


অনিয়মের কারণে ভোট চলাকালে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করা সম্ভব নয় বলে প্রতীয়মান হলে তদন্ত সাপেক্ষে পুরো নির্বাচনী এলাকার নির্বাচনী ফলাফলের গেজেট প্রকাশ স্থগিত, নির্বাচনী ফলাফল বাতিল ও পুনর্নির্বাচনের নির্দেশ প্রদানের ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের রয়েছে। নূর হোসেন বনাম মো. নজরুল ইসলাম মামলার [৫ বিএলসি (এডি) (২০০০)] রায়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ সুস্পষ্টভাবে কমিশনকে এ ক্ষমতা দিয়েছেন। এই রায়ে গেজেট প্রকাশের পরও নির্বাচন বাতিলের ক্ষমতা কমিশনকে দেওয়া হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও