রাসুলে করিম (সা.) এবং কোরাইশ নেতাদের আপস-আলোচনা এবং গুহা সম্পর্কিত সুরার শানে নজুল

প্রথম আলো প্রকাশিত: ০২ এপ্রিল ২০২৩, ০৮:০৩

মক্কায় কোরাইশ বংশের বিভিন্ন গোত্রের স্ত্রী-পুরুষের মধ্যে ইসলাম ছড়িয়ে পড়তে লাগল, যদিও কোরাইশরা মুসলমানদের সাধ্যমতো নিপীড়ন করেই চলছিল। সাঈদ ইবনে জুবায়ের এবং আবদুল্লাহ্‌ ইবনে আব্বাসের একজন মুক্ত দাসের বরাত দিয়ে একজন হাদিসবেত্তা আমাকে বলেছেন, কোরাইশ বংশের সমস্ত গোত্রের নেতৃস্থানীয় সবাই সূর্যাস্তের পর কাবার বাইরে জমায়েত হয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন উতবা ইবনে রাবিয়া, তাঁর ভাই শায়বা, আবু সুফিয়ান ইবনে হারব আন-নাদর ইবনে আল-হারিস, বনু আবদুদ দারের ভাই, আবুল বখতাবি ইবনে হিশাম, আল-আসওয়াদ, আল-ওয়ালিদ ইবনে আল-মুগিরা, আবু জেহেল ইবনে হিশাম, আবদুল্লাহ্‌ ইবনে আবু উমাইয়া, আল-আস ইবনে ওয়াইল, নুবাই ও মুনাব্বিহ ইবনে আল-হাজ্জাজ—তাঁরা উভয়েই সাহম গোত্রের এবং উমাইয়া ইবনে খালাফ এবং সম্ভবত আরও অনেকে। তাঁরা স্থির করলেন, মুহাম্মদকে(সা.) তাঁরা ডেকে পাঠাবেন, তাঁর সঙ্গে কথা বলে সমস্ত বিষয় ফয়সালা করবেন, যাতে ভবিষ্যতে তাঁর কিছু হলে তিনি তাঁদের কোনো দোষ দিতে না পারেন।


সংবাদ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চলে এলেন নবী করিম (সা.)। কারণ তিনি ভেবেছিলেন, তাঁর নসিহতে কাজ হয়েছে। তাঁদের সবার ভালো-মন্দের জন্য তিনি চিন্তা করতেন, তাঁদের দুষ্ট জীবনধারা পীড়া দিত তাঁকে। তিনি এলেন, আসন গ্রহণ করলেন। তাঁরা বললেন, তাঁর সঙ্গে কথা বলার জন্য তাঁকে ডাকা হয়েছে। মুহাম্মদ (সা.) তাঁর গোত্রের সঙ্গে যে ব্যবহার করছেন, এমন ব্যবহার তাঁদের সঙ্গে কেউ করেনি এর আগে। তাঁরা তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগগুলোর কথা আবার বললেন। সে পুরোনো অভিযোগ, ইতিপূর্বে বহুবার যা আনা হয়েছে। যদি তিনি টাকা চান তাঁরা তাঁকে সবচেয়ে বিত্তশালী লোক বানিয়ে দেবেন। ইজ্জত চান যদি তিনি, তাঁকে তাঁরা তাঁদের রাজপুত্র বানাবেন। যদি সার্বভৌমত্ব চান তিনি, তাঁকে রাজা বানাবেন। তাঁকে যদি ভূতে আসর করে থাকে, যেভাবে হোক ওষুধ দিয়ে তাঁকে ভালো করা হবে।


রাসুলে করিম (সা.) জবাব দিলেন, তাঁর এরকম কোনো অভিলাষ নেই।


তিনি দৌলত চান না, ইজ্জত চান না, তিনি সাম্রাজ্যের ভিখারি নন। আল্লাহ্‌ তাঁকে পাঠিয়েছেন একজন পয়গাম্বর হিসেবে, তাঁর কাছে নাজিল করেছেন এক ধর্মগ্রন্থ, তাঁকে আদেশ দিয়েছেন একজন সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীর ভূমিকা গ্রহণ করার জন্য। তিনি তাদের কাছে তাঁর প্রভুর বাণী নিয়ে এসেছেন, তাদের ভালো উপদেশ দিয়েছেন। তারা যদি সে উপদেশ শোনে, তাহলে তারা ইহকাল ও পরকালে শান্তি পাবে। আর তারা যদি তাঁকে প্রত্যাখ্যান করে, তাহলে তিনি ধৈর্যসহকারে অপেক্ষা করবেন, আল্লাহ্‌ তাঁর সমস্যা সমাধান করে দেবেন। নবী করিম (সা.) বস্তুত যা বলেছিলেন, এই হলো তার সারমর্ম।


তাঁরা বললেন, ‘দেখো মুহাম্মদ(সা.), তুমি যদি আমাদের একটি প্রস্তাবও গ্রহণ না করো, ঠিক আছে, তাহলে যা চাই তা তুমি আমাদের দাও। তুমি তো জানো, আমাদের যত পানি আর জমির অভাব, এমন আর কারও নেই। আমাদের মতো এমন দুঃখ-কষ্টের জীবন আর কারও নেই। তাহলে তুমি যে বলছ তোমার প্রভু তোমাকে পাঠিয়েছেন, তোমার সেই প্রভুকে বলো, যেসব পাহাড় আমাদের বন্দী করে রেখেছে, তা সরিয়ে নিতে। আমাদের দেশকে সমতল করে দিতে বলো তোমার প্রভুকে। সিরিয়া ও ইরাকে যেমন নদী আছে, তেমনি নদী আমাদের দিতে বলো তাঁকে। তাঁকে তুমি বলো, আমাদের সমস্ত পূর্বপুরুষকে পুনরুজ্জীবিত করে দিতে। পুনরুজ্জীবিতের মধ্যে যেন কুসায়ি ইবনে কিলাব থাকেন, কারণ তিনি একজন প্রকৃত শেখ ছিলেন। তাহলে আমরা তাঁদের জিজ্ঞেস করতে পারব, তুমি যা বলে বেড়াচ্ছ তা সত্য কি মিথ্যা। তাঁরা যদি বলেন, তুমি যা বলছ তা সব সত্য, যদি আমরা যা যা চাইলাম সব তুমি আমাদের দিতে পারো, তাহলে তোমার কথা বিশ্বাস করব, আমরা জানতে পারব আল্লাহ্‌র সঙ্গে তোমার সম্পর্কটা কী, জানতে পারব তোমার কথামতো প্রকৃতই তিনি তোমাকে রাসুল বানিয়ে প্রেরণ করেছেন।’

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে