কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

নতুন শিক্ষাক্রমে ব্যাপক প্রস্তুতির প্রয়োজন ছিল

www.ajkerpatrika.com মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী প্রকাশিত: ৩১ মার্চ ২০২৩, ১৯:৩৯

দুই শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে নতুন যে শিক্ষাক্রম আংশিকভাবে এ বছর শুরু করেছে, সেটি শিক্ষাবিজ্ঞানের ধারণায় যুগোপযোগী, এতে কোনো সন্দেহ নেই। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা এমনিতেই ১১-১২টি ধারা-উপধারায় বিভক্ত হয়ে মানের দিক থেকে যে পর্যায়ে নেমে গেছে, তাতে জাতির ভবিষ্যৎ নতুন প্রজন্মের শিক্ষাদীক্ষা অনেকটাই নামসর্বস্ব হয়ে পড়েছে।


দেশে লাখ লাখ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে, কয়েক লাখ শিক্ষকও স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায় কর্মরত আছেন। ৪-৫ কোটি শিক্ষার্থী এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করছে বলে আমরা জানি। কিন্তু তাদের কজনই কৃতী, মেধাবী ও দক্ষ শিক্ষার্থী হিসেবে শিক্ষাজীবন শেষ করে কর্মজীবনে প্রবেশ করতে পারে, সেই পরিসংখ্যান খুব একটা জানা না থাকলেও আশান্বিত হওয়ার মতো যে নয়, তা বলেই দেওয়া যায়। এর প্রধান কারণ হচ্ছে সাড়ে ৪ দশক ধরে অপরিকল্পিতভাবে এবং শিক্ষানীতিবিহীন অবস্থায় দেশে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে, যেগুলোর প্রতিষ্ঠার পেছনে শিক্ষা পরিকল্পনা সম্পূর্ণরূপে অনুপস্থিত ছিল। ফলে কোথাও প্রয়োজনের তুলনায় অধিকসংখ্যক নানা ধারা-উপধারার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছেয়ে গেছে, আবার কোথাও প্রয়োজনীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চেহারাও দেখা যায় না।


শহরগুলোতেই প্রকৃত মানসম্মত শিক্ষালাভের মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা হাতেগোনা, মানসম্মত হলে তাতে ভর্তি নিয়ে কাড়াকাড়ি, এরপর শ্রেণিপাঠের মান খুঁজে পাওয়া দায় হয়ে পড়ে, প্রাইভেট-কোচিংয়ে শিক্ষার্থীদের দৌড়ঝাঁপ বেড়ে যায়। গ্রামাঞ্চলের বেশির ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই পঠনপাঠনে মান খুঁজে পাওয়া যায় না। নানা অনিয়ম-দুর্নীতি দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষাব্যবস্থার অভ্যন্তরে বাসা বেঁধে আছে। এসব নিরসনে কার্যকর উদ্যোগের দীর্ঘদিনের অনুপস্থিতি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে এগুলোর অবস্থানকেই দুর্বল করে রেখেছে। ফলে শহর-গ্রামনির্বিশেষে সর্বত্র অভিভাবকেরা সন্তানদের কাঙ্ক্ষিত মানের পাঠদানে সক্ষম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করাতে বঞ্চিত হচ্ছেন, তাই ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যাও নিচের শ্রেণি থেকেই বাড়তে শুরু করে।


গড়পড়তা লেখাপড়া নিয়ে ওপরের শ্রেণিতে ওঠা যায়, পাবলিক পরীক্ষায়ও ভালো ফল দেখানো যায়। কিন্তু বাস্তবে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী প্রয়োজনীয় জ্ঞান অর্জন, দক্ষতা লাভ কিংবা জীবনবোধ গঠনের শিক্ষা লাভ করতে পারে না। সে কারণে প্রতি ১০-১৫ বছর পরপরই শিক্ষাক্রমে নানা পরিবর্তন আনা হয়েছে, অনেক স্বপ্নের কথাও বলা হয়েছে। কিন্তু ফলাফল তেমন ভালো না হওয়ায় নতুন নতুন শিক্ষাক্রমের আমদানি করতে দেখা গেছে। এতে অবশ্য বিদেশি ঋণ ও বিশেষজ্ঞদের নানা বাহারি তত্ত্বের কথা শোনা গেছে, কিন্তু ফলাফল আগের চেয়ে খুব ভালো কিছু অর্জিত হয়নি। আমাদের দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যার হিসাব নিলে কোনোভাবেই প্রতিষ্ঠান বা শিক্ষকের ঘাটতি পাওয়া যাবে না। বরং অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই ছাত্রস্বল্পতায় রয়েছে, পাবলিক পরীক্ষায় অকৃতকার্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যাও প্রতিবছর উঠে আসছে। এর প্রধান কারণ হচ্ছে, শিক্ষাব্যবস্থা যেভাবে মানের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে অগ্রসর হওয়ার কথা ছিল, সেভাবে হয়নি।


এমন বাস্তবতায় ২০১০ সালে সৃজনশীল শিক্ষাক্রম প্রবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। ১২ বছরের অভিজ্ঞতায় সেই শিক্ষাক্রমও আয়ত্ত করতে পারেননি আমাদের বেশির ভাগ শিক্ষকই। শিক্ষার্থীদের শিখনফল অর্জিত না হওয়ার অর্থ দাঁড়ায়, এই এক যুগের শিক্ষার্থীদের বেশির ভাগই প্রকৃত শিক্ষালাভ থেকে পিছিয়ে পড়েছে, শিক্ষাজীবন সফল হয়নি, কর্মজীবনেও তারা তেমন কিছু করতে পারছে না। এটি আমাদের দেশে যুগ যুগ ধরে ঘটে আসা এক করুণ অভিজ্ঞতা। তেমন অবস্থায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় দক্ষতাভিত্তিক যে শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের উদ্যোগ সম্প্রতি নিয়েছে, সেটি শিক্ষাবিজ্ঞানের ধারণার দিক থেকে সমর্থনযোগ্য, শেখ হাসিনার সরকার সে জন্য নীতিগত সম্মতিও দিয়েছে। কিন্তু এমন একটি শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশের বাস্তবতায় ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ অত্যাবশ্যকীয় ছিল। শিক্ষকদের প্রশিক্ষিত করে তোলার জন্য যেমন সময়ের প্রয়োজন ছিল, শিক্ষাক্রমভিত্তিক পাঠসামগ্রী, লিখন ও সম্পাদনায় অভিজ্ঞ, দক্ষ ও প্রশিক্ষিত লেখক-সম্পাদকদের অন্তর্ভুক্ত করা এবং পর্যাপ্ত সময় দিয়ে পাঠসামগ্রীর প্রস্তুতি ও যাচাই-বাছাইয়ের দিকটিও সম্পন্ন করা প্রয়োজন ছিল।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও