ইট তৈরিতে বছরে ১৩ কোটি টন উর্বর মাটি নষ্ট হচ্ছে
ইট তৈরিতে বছরে ১৩ কোটি টন কৃষি জমির উর্বর মাটি (টপ সয়েল) নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আগামী ১০ বছরে এই টপ সয়েল ব্যবহার ২-৩ শতাংশ বৃদ্ধির আশংকা রয়েছে। সরকারের পরিবেশ অধিদফতরের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) শেরে বাংলা নগরস্থ বন অধিদফতরে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এ প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। কমিটির আগের বৈঠকের সুপারিশ অনুযায়ী এ অগ্রগতি প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়।
কমিটি আগের বৈঠকে টপ সয়েল ব্যবহার সংক্রান্ত তথ্য তৈরি সুপারিশ করে। এর অগ্রগতি প্রতিবেদনে বলা হয়- বাংলাদেশের মোট টপ সয়েলের পরিমাণ সংক্রান্ত কোনও তথ্য-উপাত্ত পরিবেশ অধিদফতরে নেই।
বর্তমানে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম ইট উৎপাদনকারী দেশ বাংলাদেশে ইটের কাঁচামাল হিসাবে কৃষি জমির মানসম্পন্ন উপরের মাটির ব্যবহার একটি উল্লেখযোগ্য পরিবেশগত এবং অর্থনৈতিক সমস্যা। দেশে বর্তমানে ইট ভাটার সংখ্যা প্রায় সাত হাজার ২০০ এবং বার্ষিক ইট উৎপাদন হয় প্রায় ৩২.৪ বিলিয়ন পিস। এতে প্রতি বছর টপ সয়েল ব্যবহারের পরিমাণ তিন হাজার ৩৫০ মিলিয়ন ঘনফুট (প্রায় ১২.৯৬ কোটি টন)। আগামী দশ বছরে টপ সয়েলের ব্যবহার ২-৩% বৃদ্ধি পেতে পারে প্রতিবেদনে আশঙ্কা করা হয়।
এদিকে বৈঠকে অপর একটি প্রতিবেদনে বলা হয়—দেশে ইটভাটাগুলোতে বছরে প্রায় ৩৫০০ কোটি ইট পোড়ানো হয়। এই ইট তৈরিতে প্রায় ১২ কোটি ২৫ লাখ মে. টন কৃষি জমির উর্বর মাটি ব্যবহার করা হয় এবং ইট তৈরিতে প্রায় ৫৬ লাখ মেট্রিক টন কয়লা ব্যবহৃত হয়। এর ফলে দেশে উর্বর কৃষি জমির মাটি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে এবং খাদ্য নিরাপত্তার উপর হুমকি সৃষ্টি করছে। অন্য দিকে বায়ুদূষণ সৃষ্টি করে জনস্বাস্থ্যের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করছে। এছাড়াও ইটভাটা সৃষ্ট দূষণের কারণে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে।