অনলাইনে নারীর জন্য নিরাপদ পরিবেশ কীভাবে নিশ্চিত হবে

প্রথম আলো ইশরাত হাসান প্রকাশিত: ২৮ মার্চ ২০২৩, ১৯:০৪

মানুষের জীবনযাত্রায় খুব দ্রুতই ডিজিটাল রূপান্তর ঘটছে, যার প্রভাব পড়ছে সামাজিক কার্যক্রমেও। ডিজিটাল প্রবৃদ্ধির গতি-প্রকৃতি বোঝা যায়, এমন সব পরিসংখ্যান ও তথ্য-উপাত্ত অন্তত সে কথাই বলছে। যেমন ২০২৩ সালের হিসাব অনুযায়ী বলা যায়, দেশে এখন মোবাইল ফোনের সচল সিমের মোট সংখ্যা ১৭ কোটি ৯৯ লাখ, এর মধ্যে আবার ইন্টারনেট ব্যবহারকারী রয়েছেন ৬ কোটি ৬৯ লাখের বেশি। ইন্টারনেট ব্যবহারের হার থেকে দেখা যায়, দেশের জনসংখ্যার ৩৮ দশমিক ৯ শতাংশ মানুষই এ সুবিধা গ্রহণ করছেন। স্মার্টফোন ও ইন্টারনেট সহজলভ্য হওয়ার কারণে আবার দেশের ২৬ শতাংশ মানুষ বিভিন্ন ধরনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করছেন। এর মানে দেশে বিভিন্ন ধরনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিয়মিত ব্যবহার করছেন, এমন মানুষের সংখ্যা প্রায় ৪ কোটি ৪৭ লাখের বেশি।


এবার নারীদের জন্য নিরাপদ ডিজিটাল পরিসর নিয়ে কিছু তথ্য তুলে ধরি। একশনএইড বাংলাদেশের সাম্প্রতিক এক গবেষণা থেকে দেখা যায়, শতকরা ৬৪ জন নারীই জীবনের কোনো না কোনো সময় অনলাইনে হয়রানি ও সহিংসতার শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে আবার যৌন হয়রানিমূলক মন্তব্যের শিকার হয়েছেন ৮০ দশমিক ৩৫ শতাংশ নারী। এ ছাড়া ইনবক্সে অশ্লীল ছবি বা অনৈতিক প্রস্তাবের মাধ্যমে হয়রানি করা হয়েছে ৫৩ দশমিক ২৮ শতাংশ নারীকে; পাশাপাশি সাইবার স্টকিংয়ের শিকার হয়েছেন ১৬ দশমিক ১৬ শতাংশ নারী। এভাবে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা উপায়ে হয়রানি ও সহিংসতার শিকার হচ্ছেন নারীরা। এ যেন দেশের ডিজিটাল অগ্রযাত্রার চিত্র থেকে একদম আলাদা কোনো প্রেক্ষাপট।


বর্তমানে যোগাযোগসহ নানা কারণে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম হিসেবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আমাদের জীবনযাত্রার অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছে। এই প্রয়োজন অস্বীকার করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার কোনো উপায় নেই। আর সমাজের অংশ হিসেবে ডিজিটাল সব ক্ষেত্রে নারীর সমান অংশগ্রহণ থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ও ইউএন উইমেন বাংলাদেশ পরিচালিত এক গবেষণার ফলাফল থেকে দেখা যায়, দেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে ২১ দশমিক ২৫ শতাংশই নারী। পাশাপাশি আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় ডিজিটাল বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ছে। নারী উদ্যোক্তারা তাঁদের পণ্য ও সেবা নিয়ে অনলাইনে হাজির থাকছেন, আর এর মধ্য দিয়ে দেশের অর্থনীতি ও সামাজিক পরিবর্তনে নারীর ভূমিকা বাড়ছে।


ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে নারীর অংশগ্রহণ একদিকে যেমন বাড়ছে, তেমনি অনলাইনে নারীদের প্রতি হয়রানি ও সহিংসতার ঝুঁকিও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। বিশেষ করে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অশ্লীলতা, ঘৃণা-বিদ্বেষ, বৈষম্য, সহিংসতা ও হয়রানির সহজ শিকারে পরিণত হচ্ছেন নারী। বাংলাদেশ পুলিশ পরিচালিত একটি সমীক্ষার ওপর ভিত্তি করে আইন ও সালিশ কেন্দ্র জানায়, ২০২১ সালে সংঘটিত সাইবার ক্রাইমে ৭০ শতাংশ ভুক্তভোগীই নারী। এ থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমও নারীর জন্য অনিরাপদ জায়গায় পরিণত হচ্ছে। আর এর ফলাফলও সুদূরপ্রসারী, অনলাইন প্ল্যাটফর্মে নারীর অংশগ্রহণ বাধাগ্রস্ত হলে সমাজ, অর্থনীতি, ডিজিটাল অগ্রযাত্রাসহ দেশের উন্নয়নের সব ক্ষেত্রে এর প্রভাব পড়বে। দেশের অর্ধেক জনসংখ্যাকে অনলাইনে অনিরাপদ রেখে অগ্রগতির কোনো লক্ষ্য পূরণ করাই সম্ভব নয়। এ কারণেই আমাদের ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলোয় নারীর জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করতে হবে।


ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলোয় নারীর জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরির উপায় কী হতে পারে? অনলাইনে নারীর প্রাইভেসি নিরাপদ রাখার মধ্য দিয়ে কীভাবে তাঁদের হয়রানি ও সহিংসতা থেকে মুক্ত রাখা যায়, এর মাধ্যমে সামাজিক ও অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় কীভাবে তাঁদের ভূমিকা আরও বৃদ্ধি করা যায়, বিষয়গুলো নিয়ে ভেবে দেখার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।


নারীর জন্য নিরাপদ ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম নিশ্চিত করতে হলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও এর ব্যবহারকারী দুই পক্ষকেই এগিয়ে আসতে হবে। বিভিন্ন অপ্রীতিকর ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি বেশ কিছু সামাজিক যোগাযোগ প্ল্যাটফর্ম নারীদের জন্য নিরাপদ অনলাইন স্পেস তৈরিতে কাজ শুরু করেছে। এর মধ্যে চোখে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইমোর বেশ কিছু উদ্যোগ। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মটি নারীর অনলাইন নিরাপত্তা ও ব্যক্তিগত গোপনীয়তার প্রতি গুরুত্ব দিয়ে পরপর বেশ কিছু ফিচার নিয়ে এসেছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও