বাংলাদেশে অনর্থনীতিচর্চা

প্রথম আলো মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান প্রকাশিত: ২৭ মার্চ ২০২৩, ১৮:০৪

সাম্প্রতিক কালে শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার কয়েকটি দেশে অর্থনৈতিক সংকট দেখা দিয়েছে। এসব দেশের সরকার কোভিড অতিমারি ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এর কারণ বলে চালিয়ে দিতে চাইলেও এর মূল কারণ এসব দেশে অনর্থনীতিচর্চা।


অনর্থনীতি কী?


অর্থনীতি কী, সেটা সবাই জানি। কিন্তু অনর্থনীতি কী? সাধারণভাবে, যেসব নীতি ও কর্মকাণ্ড গ্রহণ করা হলে দেশের অর্থনীতিতে অনর্থ ঘটে, সেগুলোই অনর্থনীতি। বিশেষ করে সরকারের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার ক্ষেত্রে অর্থনীতির তত্ত্ব ও নিয়ম থেকে ব্যত্যয়কে আমরা অনর্থনীতি বলতে পারি।


দেশে অনর্থনীতিচর্চা বেড়েছে


সাম্প্রতিক কালে অনর্থনীতিচর্চা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। তাই প্রথমেই সংক্ষেপে পৃথিবীর সব দেশে সরকারের ছয় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং এর বিপরীতে বাংলাদেশে অনর্থনীতিচর্চার কিছু উদাহরণ তুলে ধরব।


আইনি ও সামাজিক কাঠামো বজায় রাখা


এ কর্মকাণ্ডের আওতায় সরকার আইন, আদালত ও সম্পত্তির অধিকার, মুদ্রাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করে এবং সঠিক তথ্য ও উপাত্ত সরবরাহ করে অর্থনীতির বিকাশে সহায়তা করে।


বাংলাদেশে আইনি কাঠামোর দুর্বলতার বড় উদাহরণ হলো বিদেশি সংস্থার সঙ্গে চুক্তির ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণকারী আইন (গভর্নিং ল) হিসেবে বিলেতের আইনসহ ভিনদেশি আইনি কাঠামো গ্রহণ, সালিস নিষ্পত্তির ক্ষেত্র হিসেবে লন্ডন ও সিঙ্গাপুরের মতো স্থান নির্ধারণ। আইনি দুর্বলতা ছাড়াও বিচারকদের যোগ্যতা, নিরপেক্ষতা ও সততার অভাব, বিচারপ্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতা ও মামলাজট এ জন্য দায়ী বলে মনে করা হয়।


সঠিক তথ্য ও উপাত্ত সরবরাহে ব্যর্থতার সাম্প্রতিক উদাহরণ হলো, দেশে মার্কিন ডলারে মোট দেশজ উৎপাদনের আকার বেশি দেখানোর জন্য ডলারের দাম ধরে রাখা হয়েছিল এবং একই সঙ্গে মাথাপিছু আয় বেশি দেখানোর জন্য লোকসংখ্যা কম দেখানো হয়েছিল। এসবই করা হয়েছিল মাথাপিছু জিডিপি বেশি দেখিয়ে বাংলাদেশ নিম্নমধ্যম আয়ের দেশ হয়ে গেছে এ প্রচারণার জন্য। এখন সেটার ধাক্কা সামলাতে টাকার দ্রুত ও ব্যাপক অবমূল্যায়ন হয়েছে।


প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করা


এখানে সরকারের কাজ হলো অ্যান্টি ট্রাস্ট আইন বলবৎ ও কার্যকর এবং একচেটিয়া ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করা। প্রতিযোগিতার উদ্দেশ্য হলো ক্রেতা যাতে মানসম্মত পণ্য সাশ্রয়ী মূল্যে পেতে পারেন। সরকারি সংগ্রহের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন দাম, সর্বোচ্চ মানসম্পন্ন পণ্য ও সেবা ক্রয়।


বাংলাদেশে প্রতিযোগিতা কেবল ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের মধ্যে সীমিত। বড় ব্যবসায়ীদের কার্টেল কীভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সংকট সৃষ্টি করে দাম বাড়ায়, তা আমরা জানি। সরকারি পণ্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা অনুপস্থিত বলা চলে। বিস্ময়কর হলো বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি আইনের মাধ্যমে প্রতিযোগিতার নির্বাসনকে বৈধতা দেওয়া হয়েছে।


সামাজিক পণ্য ও সেবার ব্যবস্থা করা


প্রতিরক্ষা ও অন্যান্য সর্বজনীন পণ্য ও সেবা, যা বাজারব্যবস্থা সরবরাহ করতে অনিচ্ছুক বা অক্ষম, তা সরবরাহ করা সরকারের দায়িত্ব। সামাজিক পণ্য ও সেবার ক্ষেত্রে অনর্থনীতি অনুসরণের দৃষ্টান্ত হলো, আমাদের হাসপাতাল ও স্কুলগুলোর বেহাল অবস্থা, বিদ্যুৎ খাতে অনিয়ম ও অন্যান্য ভৌত অবকাঠামো প্রকল্প বাস্তবায়নে অবিশ্বাস্য বিলম্ব ও আকাশচুম্বী মূল্যবৃদ্ধি।


আয় ও সম্পদের পুনর্বণ্টন


দেশে সম্পদ ও আয়ের বৈষম্য সীমিতকরণের লক্ষ্যে, ধনীদের থেকে উচ্চ হারে কর আদায়, সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী সৃষ্টি, স্বল্প মূল্যে মৌলিক চিকিৎসাব্যবস্থার মাধ্যমে আয় ও সম্পদের পুনর্বণ্টন করা সরকারের অন্যতম একটি কাজ। ধনীদের থেকে কর আদায়ে নীতি ব্যর্থতার একটি বড় ফলাফল হলো ক্রমাগতভাবে কর ও জিডিপির অনুপাত হ্রাস। অপ্রতুল কর রাজস্বের কারণে কার্যকর সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীর প্রসার করা যাচ্ছে না।


সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও