ব্যাংকারকে পরানো হয় ‘বিশেষ চশমা’, দুই লাখ টাকা দিয়ে ছাড়া পান তিনি

প্রথম আলো প্রকাশিত: ২৭ মার্চ ২০২৩, ১৮:৫১

আসন রদবদলের পরপরই যাত্রীবেশে থাকা ডাকাতদের পরিচয় প্রকাশ পায়। দুজনের মাঝখানে বসে থাকা সাইফুলের গলায় চাকু ধরে একজন বলেন, ‘এই একদম চুপ। চিৎকার করবি তো মরবি। ভালোয় ভালোয় যা কিছু আছে দিয়ে দে।’ এ সময় ডাকাতেরা সাইফুলের চোখে বিশেষ ধরনের কালো গ্লাস পরিয়ে দেন, এতে তিনি আর কিছু দেখতে পারছিলেন না। তখন সাইফুল বুঝতে পারেন, কী ভয়ংকর বিপদেই না তিনি পড়েছেন।


এই সাইফুলের পুরো নাম সৈয়দ মো. সাইফুল ইসলাম (৪০)। তিনি ট্রাস্ট ব্যাংকের নরসিংদীর মাধবী শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার। পরিবার নিয়ে থাকেন রাজধানীর বাড্ডা এলাকায়। ঢাকা থেকে নরসিংদীতে গিয়ে অফিস করেন। সাধারণত বাসে যাতায়াত করেন তিনি। ৬ মার্চ সকালে বাস না পেয়ে উঠে পড়েন একটি প্রাইভেট কারে। কিছু দূর যাওয়ার পর তাঁর সঙ্গে ঘটে ওই ঘটনা। শ্বাসরুদ্ধকর চার ঘণ্টা ডাকাতের কবলে থেকে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা দিয়ে ছাড়া পান তিনি।


এই চার ঘণ্টা কেমন করে পার করেছিলেন, তা বোঝাতে সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘আমি কেবল আল্লাহর নামই নিয়েছি। আর ডাকাতদের হাত–পায়ে ধরি বলেছিলাম, আমার কোনো ক্ষতি করবেন না। আপনারা যা চান, তা আমি দেওয়ার চেষ্টা করব।’


এ ঘটনায় খিলক্ষেত থানায় একটি মামলা হয়েছে। ঘটনা অনুসন্ধান করে পুলিশ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে। ডাকাতদের ব্যবহৃত প্রাইভেট কার এবং বিশেষ চশমাটিও উদ্ধার করা হয়েছে। খিলক্ষেত থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী সাহান হক প্রথম আলোকে বলেছেন, এই ডাকাত দলের সবাই পেশাদার অপরাধী। তাঁদের প্রত্যেকের নামে কমপক্ষে ছয়টি করে মামলা রয়েছে। কারও কারও বিরুদ্ধে খুনের মামলাও রয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে ডাকাত দলের সদস্যরা স্বীকার করেছেন, এর আগেও যাত্রীবেশে প্রাইভেট কারে নিরীহ মানুষদের তুলে মোটা অঙ্কের টাকা মুক্তিপণ আদায় করেছেন তাঁরা।


যেভাবে খপ্পরে পড়েন সাইফুল


ব্যাংকার সাইফুল ইসলাম সেদিন সকালে বাড্ডা থেকে প্রথমে যান খিলক্ষেতের কুড়াতলি বিআরটিসির বাস কাউন্টারে। তখন সময় সকাল ৮টা ১০ মিনিট। এর কিছুক্ষণ আগে বিআরটিসির বাসটি ছেড়ে যায় নরসিংদীর উদ্দেশে। বাস না পেয়ে সাইফুল দুশ্চিন্তায় পড়ে যান। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, বিআরটিসির পরের বাস নয়টায় ছাড়বে। এ তথ্য জানার পর সাইফুলের মনে আরও দুশ্চিন্তা ভর করে। বাসের অপেক্ষায় থাকা সাইফুলের সামনে একটা প্রাইভেট কার থামে। চালকের পাশে বসে ছিলেন একজন। আর কোনো যাত্রী ছিল না। তখন সেই চালক সাইফুলের উদ্দেশে করে বলেন, ‘কোথায় যাবেন ভাই?’ জবাবে সাইফুল জানান, নরসিংদী যাবেন। তখন গাড়ির চালকও সাইফুলকে বলেন, তিনিও নরসিংদী যাবেন। তখন সাইফুল কোনো কিছু না ভেবে ওই প্রাইভেট কারে উঠে বসেন।
তখন ওই স্ট্যান্ড থেকে আরও দুজন যাত্রী ওই প্রাইভেট কারে ওঠেন। নরসিংদীর উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে গাড়িটি। কিছুক্ষণ যাওয়ার পর একজন যাত্রী সাইফুলকে বলেন, তাঁর বমি বমি ভাব হচ্ছে, জানালার পাশে বসতে চান। তখন সাইফুল জানালার পাশ থেকে মাঝখানে এসে বসেন। ওই যাত্রী যান জানালার কাছে। এর পরপরই ডাকাতেরা নিজেদের পরিচয় প্রকাশ করেন। দুজনের মাঝখানে বসে থাকা সাইফুলের গলায় একজন চাকু ধরে বলেন, ‘এই একদম চুপ। চিৎকার করবি তো মরবি। ভালোয় ভালোয় যা কিছু আছে দিয়ে দে।’


প্রাইভেট কারটিতে ওঠার সময় সাইফুল দেখেছিলেন, গাড়ির কাচ নামানো। তবে যখন তাঁর গলায় চাকু তখন দেখতে পান, গাড়ির কালো গ্লাস ওঠানো। ভেতর থেকে বাইরে কিছুই দেখা যাচ্ছে না। তখন ডাকাতেরা সাইফুলের চোখে বিশেষ ধরনের কালো গ্লাস পরিয়ে দেন। তখন ভয় পেয়ে যান সাইফুল ইসলাম।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও