কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

আর কত প্রাণ গেলে আমাদের হুঁশ হবে

www.ajkerpatrika.com বিভুরঞ্জন সরকার প্রকাশিত: ২২ মার্চ ২০২৩, ১৬:০৭

১৯ মার্চ ভোরে এক ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় ১৯ জন মানুষের মৃত্যুর ঘটনাটি নতুন করে আবার এই প্রশ্নটি সামনে এনেছে যে আমরা কি কোনো কিছু থেকেই শিক্ষা নেব না? একটি দুর্ঘটনা ঘটবে, কারণ খুঁজব, একটু-আধটু বিলাপও করব কিন্তু কিছুতেই অব্যবস্থাপনা দূর করার চেষ্টা করব না! দেশে ভালো সড়ক অবকাঠামো গড়ে উঠেছে, মানুষের যাতায়াত বেড়েছে, নানা ধরনের যানবাহন বেড়েছে, বেড়েছে যানবাহনের গতি। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে দুর্ঘটনা ও মৃত্যু। একটি পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, সড়ক দুর্ঘটনায় বছরে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা। ভাবা যায়! এই টাকা পদ্মা সেতু নির্মাণ ব্যয়ের চেয়েও বেশি! ২০২২ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রায় ১০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সড়কে শিক্ষার্থী মৃত্যুর হারও উদ্বেগজনক, শতকরা ১৬ ভাগ।


সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে এবং নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে করণীয়গুলো অজানা নয়। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় সরকারপ্রধান থেকে শুরু করে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তাব্যক্তিরা অনেক প্রতিশ্রুতি দিলেও ব্যক্তি ও গোষ্ঠীস্বার্থের কারণে কোনো প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন হয় না। দুর্ঘটনা ঘটতেই থাকে।


আসা যাক, ১৯ মার্চের দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে। খুলনা থেকে ছেড়ে আসা ইমাদ পরিবহনের একটি বাস পদ্মা সেতুতে ওঠার আগে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এক্সপ্রেসওয়ের রেলিং ভেঙে ছিটকে পড়ে। এরপর কমপক্ষে ১০০ ফুট নিচে আন্ডারপাসের দেয়ালের সঙ্গে সজোরে ধাক্কা লেগে বাসটি দুমড়েমুচড়ে যায়। এতে চালক জাহিদ হাসান, তাঁর সহকারী ইউসুফসহ মোট ১৯ জনের মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনাটি ঘটেছে সেতু থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে, নিরাপত্তাবেষ্টনীহীন এলাকায়। ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের ঢাকা থেকে মাওয়া পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে নিরাপত্তাবেষ্টনী আছে। কিন্তু পদ্মা সেতু প্রকল্পের অধীন সড়কটির সাড়ে ১১ কিলোমিটার অংশে কোনো নিরাপত্তাবেষ্টনী নেই।


নিরাপত্তাবেষ্টনী না থাকার কারণ সম্পর্কে পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘এটা ডিজাইনে ছিল না। যে ডিজাইন দেওয়া হয়েছে, সেই ডিজাইন অনুযায়ী আমরা কাজ করেছি। এখন এই ডিজাইনে নিরাপত্তাবেষ্টনী যুক্ত করতে হলে বিশেষজ্ঞ মতামত লাগবে। সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমার কাজ ডিজাইন অনুসরণ করা। আমি সেটা করেছি।’ ডিজাইনে নিরাপত্তাবেষ্টনী না থাকার দায় কার? প্রকল্প পরিচালক তা বলেননি। তিনি মাছিমারা কেরানির মতো ডিজাইন অনুসরণ করেছেন।


প্রশ্ন হলো, এই নিরাপত্তাবেষ্টনী না থাকায় এতগুলো মানুষের মৃত্যুর দায় কে নেবে? এত এত সরকারি সংস্থা, এত কর্মকর্তা, তারপরও কেন এই অবহেলা? যাঁরা মানুষের ট্যাক্সের পয়সায় মোটা মাইনে, গাড়ি-বাড়ি পান, জীবন যাঁদের নিরাপদ, তাঁরা সাধারণ মানুষের চলাচলের ব্যবস্থাটা নিরাপদ করার বিষয়ে উদাসীনতা দেখান কী করে?


যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক শামছুল হক বলেছেন, খুলনা করিডরে অবকাঠামোতে একধরনের ত্রুটি আছে। নিয়ম বলছে, কোনো সড়ক বাঁধ যদি মাটি থেকে ৮ ফুট ওপরে হয়, তাহলে ঝুঁকি বিবেচনায় অবশ্যই টানা নিরাপত্তাবেষ্টনী দিতে হবে। যেখানে দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেখানে কিন্তু কোনো টানা রেলিং ছিল না।


অধ্যাপক শামছুল হক বলেন, যেকোনো কারণেই হোক না কেন, দুর্ঘটনা ঘটতেই পারে। কিন্তু এত ওপর থেকে গাড়ি নিচে পড়তে দেব কেন? এখানে সমান্তরাল নিরাপত্তাবেষ্টনী কেন দেওয়া হলো না? এখানে অবকাঠামো উন্নয়ন নিরাপদ কি না, সে নিরীক্ষা করা দরকার।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও