নতুন রুটিনে রমজান মাসে খাবার থেকে ঘুম, মানিয়ে নেবেন যেভাবে

প্রথম আলো প্রকাশিত: ২২ মার্চ ২০২৩, ১০:০৪

এবারও চৈত্র-বৈশাখের দাবদাহের মধ্যে পড়ছে রমজান। এই আবহাওয়ায় লম্বা একটা সময় পানি না খেয়ে থাকতে হবে। সন্ধ্যা থেকে সাহ্‌রির মধ্যেই তাই সারা দিনের পানির চাহিদা পূরণ করে নিতে হবে। খাবারের বেলায়ও তা–ই। কর্মস্থলের সময়সূচিও বদলাচ্ছে। পরিবর্তিত জীবনধারায় মানিয়ে নিতে একটু সময় লাগতে পারে কারও কারও। সময়ের সঙ্গে জীবনধারায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে চাই সু-অভ্যাসের চর্চা।


খাওয়াদাওয়া ঠিকঠাক


সারা দিন না খেয়ে থাকা হচ্ছে বলে সন্ধ্যা, রাত বা শেষ রাতে একেবারে ভরপেট খেয়ে ফেলা যাবে না। সংযমের মাসে সংযম ধরে রাখতে হবে। যে সময়ে খাবার খেতে পারছেন, সে সময়ের মধ্যে ভাগে ভাগে অল্প করে খান। ইফতারি, রাতের খাবার ও শেষ রাতের খাবার—মূলত এই তিনটি সময়ে খাওয়ার চল থাকলেও ভাগে ভাগে খাওয়া ভালো। ইফতারি মানেই ভাজাপোড়া, প্রচলিত এই ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে চেষ্টা করুন। আর শুধু ইফতারে কেন, সব বেলায়ই অতিরিক্ত তেল বা মসলা দেওয়া খাবার এড়িয়ে চলুন। সুস্থ থাকতে চাইলে ফাস্ট ফুড অবশ্যই–বর্জনীয়। হালকা খাবার খাওয়ার অভ্যাস করুন। এতে সুস্থ থাকবেন। তাজা ফল কিংবা সবজি দিয়ে তৈরি বিভিন্ন পদ খেতে পারেন। পরিশোধিত বা রিফাইনড খাবার না খাওয়াই ভালো। বুফে পদ্ধতিতে পরিবেশিত বা ইফতারের অফুরান আয়োজনে যোগ না দেওয়াই ভালো। সারা দিনে আপনার যতটা ক্যালরি প্রয়োজন, ইফতারের সময় থেকে শেষ রাতের মধ্যে ঠিক ততটাই গ্রহণ করুন। এর বেশি নয়। পাতে বাড়তি লবণ নেবেন না। খাবার প্রস্তুতকরণ ও পরিবেশনে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন। অস্বাস্থ্যকর, খোলা খাবার খাবেন না। খাবার বা পানি খাওয়ার পরপরই শুয়ে পড়বেন না।


তৃষ্ণায় চাই তৃপ্তি


ইফতারের কাছাকাছি সময়ে হয়তো তৃষ্ণা পাবে খুব। যাঁরা বাইরে যান এবং ঘরের কাজ করেন, প্রত্যেকেরই এ রকম হতে পারে। তাই ইফতার থেকে শুরু করে শেষ রাতের মধ্যে পর্যাপ্ত পানি খেতে হবে। কেবল পানিই নয়, তাজা ফলের রস বা শরবত, লাচ্ছি, স্মুদির মতো তরলও গ্রহণ করতে পারেন। তবে অতিরিক্ত চিনি খাবেন না। মিষ্টি পানীয়ের বদলে একটু পানসে স্বাদের পানীয়ই স্বাস্থ্যকর। এই আবহাওয়ায় ২৪ ঘণ্টায় আপনার যতটা পানির প্রয়োজন, অন্তত সেই পরিমাণটা অবশ্যই পূরণ করে নিতে হবে। তবে সেটাও ভাগে ভাগে। একবারে ভরপেট পানি খেলে হাঁসফাঁস লাগবে। ইফতারের শুরুতে খানিকটা পানি খেলেও কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী খাবারের আধঘণ্টা পর পানি বা তরল খাবার খাওয়া উচিত।


ঘুমের বেলা


রমজানে তারাবিহর নামাজ ও অন্যান্য ইবাদতে আলাদা সময় দেওয়া হয়। শেষ রাতে ঝটপট উঠে যাওয়ার তাড়াও থাকে। সব মিলিয়ে ঘুমের সময়টা কমে যায়। ঘুম ঠিক রাখতে আনুষঙ্গিক কাজকর্ম কমিয়ে আনুন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কম সময় ব্যয় করুন। দিনেও খানিকটা ঘুমিয়ে নিন। এতে ক্লান্তি ভাব কমে আসবে।


শরীরচর্চাও চলুক


একটা মাস খুব ভারী ব্যায়াম না করলেও ক্ষতি নেই। তবে শরীরচর্চার অভ্যাস ছাড়বেন না। মাঝারি বা হালকা ব্যায়াম করতে পারেন। শরীরচর্চার জন্য দিনের প্রথম ভাগটা বেছে নিতে পারেন। রমজানে বিকেলের দিকে শরীরচর্চা না করাই ভালো। রাতেও ব্যায়াম করা যায়। তবে খাওয়ার পর ১-৩ ঘণ্টা বিরতি দিয়ে শরীরচর্চা করা উচিত।


রোগাক্রান্ত ব্যক্তি


রোগাক্রান্ত ব্যক্তি রোজা রাখতে পারবেন কি না, সে বিষয়ে তাঁর চিকিৎসকের সঙ্গে আলাপ করে নেওয়া উচিত। রোজা রাখলে ওষুধের সময়ও এদিক-ওদিক করে নিতে হয়। এই পরামর্শ যাঁর যাঁর চিকিৎসকের কাছ থেকে নেওয়াই ভালো হবে।


নারীর জন্য বিশেষ সময়


নারীর জীবনধারা প্রাকৃতিক নিয়মেই কিছুটা আলাদা। মাসিকের সময়টায় নারীকে পর্যাপ্ত পানি গ্রহণ নিশ্চিত করা আবশ্যক। এ দেশের বহু নারী রমজান মাসে দিনের বেলায় নিজের সন্তানের সামনে পানি খেতেও সংকোচ বোধ করেন। কর্মস্থলেও তাঁর সঙ্গী সেই সংকোচ। অথচ একজন নারীর মাসিক হতে পারে, তিনি গর্ভবতী হতে পারেন, স্তন্যদায়ী হতে পারেন, মোদ্দাকথা নানা কারণেই তিনি সিয়াম সাধনা করতে অসমর্থ হতে পারেন। এমন বিশেষ সময়ে পানি ও খাদ্য গ্রহণে ধর্মীয় বাধা নেই। বাধাটা সামাজিক। কিন্তু একটি মানবিক সমাজে এমনটা কাম্য নয়। বরং প্রয়োজনমতো তাঁর পানি ও খাদ্য গ্রহণের স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করা সবারই কর্তব্য।


সবার জন্য ভাবনা


আত্মশুদ্ধির এই মাসে মহান আল্লাহর ইবাদতে মনোযোগী হন নিবেদিতপ্রাণ মুসলমানরা। পাশাপাশি তাঁর সৃষ্টিকুলের প্রতিও মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন। বাড়িতে যিনি কাজ করেন, চুলার উত্তাপে দাঁড়িয়ে যিনি রান্না করেন, তাঁর খেয়াল রাখাও বাকি সবার দায়িত্ব। তাঁকে যতটা সম্ভব সহযোগিতা করুন, তাঁর বিশ্রাম নিশ্চিত করুন। আপনার অধীন কর্মরত ব্যক্তির প্রতি মানবিক আচরণ করুন। দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ান। প্রাণিকুলের প্রতি সহমর্মী হোন। তবেই না সার্থক হবে আপনার সিয়াম সাধনা।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও