কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

হাতি গর্তে পড়লে চীন কী করে

সমকাল ফারুক ওয়াসিফ প্রকাশিত: ২২ মার্চ ২০২৩, ০২:০০

হাতি গাড্ডায় পড়লেই সাহায্য করতে যেতে হয়; মুক্ত অবস্থায় নয়। মুক্ত হাতির ধারেকাছে যাওয়া বিপজ্জনক। চীনা প্রেসিডেন্ট মস্কোয় গেলেন কোন হাতিকে সাহায্য করতে? ইউক্রেনীয় গর্তে তো একা রাশিয়া পড়েনি; যুক্তরাষ্ট্রও পড়ে গেছে।


চীনের মধ্যপ্রাচ্য কূটনীতি তুমুল সফল। চীন-সৌদি-ইরান মৈত্রীর সূচনা হয়েছে। ইরান তো তাদের অর্থনৈতিক ও সামরিক মিত্রই। এখন সৌদি আরবকেও আমেরিকার কোল থেকে সরিয়ে আনা গেল। এই জোরদার আত্মবিশ্বাস নিয়েই শি জিনপিং মস্কোমুখী হলেন। ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বন্ধুত্বের দফা পাকা করে শান্তির রফা করবেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে। তবে এবারের বাজিটা মধ্যপ্রাচ্যের চেয়ে অনেক বড়। এবং চীন-রাশিয়া বন্ধুত্বের সীমানা যে প্রায় অসীম, সেটাও দেখা যাবে এবার। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী তো বলেই ফেলেছেন, ‘চীন দায়িত্বহীন।’


রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সমাধান দেবে চীন? বেইজিংয়ের খেলা এটাই— রাশিয়াকে দাও অস্ত্র আর ইউক্রেনকে আটকাও কূটনৈতিক জালে। চীন কোনোভাবেই ইউক্রেনকে জিততে দিতে পারে না। চীন দেখাতে চায়, ইউক্রেনের মতো দেশকে পশ্চিমারা যদি বাঁচাতে না পারে, তাহলে
তাইওয়ানকে কীভাবে বাঁচাবে? এদিকে জেলেনেস্কি যতই লড়কে লেঙ্গে ভাব দেখান, ২০১৪ থেকে ২০২১ পর্যন্ত ইউক্রেনের ন্যাটো প্রশিক্ষিত সেনাবাহিনীর সবটাই (এক লাখ ২০ হাজার) প্রায় নিহত। যারা লড়ছে, তারা সদ্যপ্রশিক্ষিত এবং বিদেশি। রাশিয়া যখনই বুঝেছে, ঝোড়ো গতিতে কিয়েভ দখল করা সম্ভব নয়, তখনই যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করেছে। যুদ্ধ যত লম্বা হবে, কেবল রাশিয়ারই সম্পদ খরচ হবে না, রিসোর্স ফুরাবে আমেরিকা ও তার মিত্রদেরও। এর মধ্যে পশ্চিমাদের বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের রসদ আর অস্ত্র ইউক্রেনের তৃণভূমি আর নদীর পাড়ে খরচ হয়ে গেছে। তাদের পক্ষে বেশিদিন নিজেদের সামরিক সামর্থ্য কমিয়ে ইউক্রেনকে মদদ দেওয়া বুদ্ধির পরিচয় হবে না। ওদিকে রাশিয়াকে অর্থনৈতিক অবরোধ করতে গিয়ে পশ্চিমারা নিজেরাই জেরবার। আমেরিকার বড় বড় ব্যাংক দেউলিয়া হতে যাচ্ছে। আর পশ্চিমাদের ছেড়ে যাওয়া রুশ ব্যবসাগুলো নিয়ে নিচ্ছে চীন। চীন রাশিয়ার জ্বালানি তেল ও গ্যাসের সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী। যুদ্ধের বরাতে আন্তর্জাতিক বাজারের চেয়ে কম দামে কেনার সুযোগ হয়েছে। তাও আবার চীনা মুদ্রায়।


এই যুদ্ধের সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী তাই চীন। এক যুদ্ধেই চীনের অনেক সমস্যা সমাধান হয়ে যাচ্ছে। চীনের অর্থনীতি সবল হচ্ছে। রুশ ব্যবসা, আমদানি, এমনকি আন্তর্জাতিক ডিজিটাল লেনদেন থেকে শুরু করে ক্রেডিট কার্ড ব্যবসায় নিয়ে নিয়েছে চীনা কোম্পানিরা। কভিড-১৯ নিয়ে বাড়াবাড়ি, উইঘুরে নির্যাতন, শি জিনপিংয়ের লাগাতার শাসন এবং দক্ষিণ চীন সাগর ও তাইওয়ান নিয়ে চীনের সম্প্রসারণবাদ থেকে নজর ঘুরে গেছে ইউক্রেনের দিকে। এই যুদ্ধে পরোক্ষ মদদ দিয়ে চীন এক ঢিলে মার্কিন শ্রেষ্ঠত্ব আর রুশদের দ্বিতীয় পরাশক্তি মর্যাদা ফুটো করে দিল। এখন অনেকের কাছে ভিলেন যখন পুতিন, তখন শি হাজির হয়েছেন শান্তির দূত হয়ে।


চীনের বিশ্ব পরিকল্পনায় যে কারণে স্বাধীন তাইওয়ান নেই, সে কারণে বিজয়ী ইউক্রেনও নেই। ইউক্রেন বিজয়ী হওয়া মানে মধ্য এশিয়া, বলকান, এশিয়া ও ইউরোপে আমেরিকার হাত সবল হওয়া। পুতিন হারলে তাই চীনও হারবে। ইউক্রেনের পরাজয় চীনের নতুন বিশ্বব্যবস্থার ভিত রচনা করে দেবে, আর যতি টানবে আমেরিকান শতাব্দীর। চীনা শতাব্দী শুরুর শর্ত জুগিয়ে দিল রাশিয়া। চীন একটু একটু করে এগিয়ে যাচ্ছে বিশ্ব রাজনীতির ভরকেন্দ্র হয়ে ওঠার দিকে।


চীনের এই সবল হাজিরানা যখন, তখন অনেক ইউরোপীয় রাষ্ট্রপ্রধান বেইজিং সফরের পরিকল্পনা কিংবা প্রস্তুতি নিচ্ছেন। চীনের এটি বিরাট কূটনৈতিক বিজয়। মধ্যপ্রাচ্যের পরে ইউক্রেন কূটনীতি চীনকে কূটনৈতিক বিশ্বে অপরিহার্য শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করছে।


এর অন্য সুফল হলো, অগ্নিবলয় মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি আসবে, যুদ্ধ হবে না দক্ষিণ এশিয়ায়। চীন এখন সেদিকেই তাকিয়ে, যেদিকে তাকিয়ে আছে সারাবিশ্ব: বলকান ও ককেশীয় অঞ্চল। যুদ্ধ যদিও হয়, সেটা হবে আমেরিকাকে আরও আরও ফ্রন্টে জড়িয়ে ফেলে কমজোরি করার যুদ্ধ।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও