সুন্দরবনে থামছে না বিষ দিয়ে মাছ শিকার
বিশ্বখ্যাত ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবনের নদী ও খালে বিষ প্রয়োগ করে মাছ শিকার চলছেই। এতে বনের মৎস্য সম্পদ ও জলজসহ বিভিন্ন প্রাণীর অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়েছে। অভিযোগ রয়েছে, এক শ্রেণির অসাধু বনরক্ষীদের নিয়মিত মাসোহারা দিয়ে জেলেরা বিষ প্রয়োগ করে মাছ শিকার করছেন।
বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৬ হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটার আয়তনের সুন্দরবনের জলভাগের পরিমাণ ১ হাজার ৮৭৪ বর্গকিলোমিটারের বেশি, যা সমগ্র সুন্দরবনের ৩১ দশমিক ১৫ ভাগ। এই জলভাগে জালের মতো ছড়িয়ে রয়েছে ১৩টি বড় নদ-নদীসহ ৪৫০টির মতো খাল। জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হওয়া এই বনের নদ-নদী ও খালে ভেটকি, রুপচাঁদা, দাঁতিনা, চিত্রা, পাঙাশ, লইট্যা, ছুরি, মেদ, পাইস্যা, পোয়া, তপসে, লাক্ষা, কই, মাগুর, কাইন, ইলিশসহ ২১০ প্রজাতির সাদা মাছ হয়ে থাকে। এ ছাড়া রয়েছে গলদা, বাগদা, চাকা, চালী, চামীসহ ২৪ প্রজাতির চিংড়ি।
উপকূলীয় এলাকা ও বন বিভাগের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুর্বৃত্তরা পাস পারমিট নিয়ে বনে প্রবেশের সময় নৌকায় বিষাক্ত কীটনাশক নিয়ে যায়। পরে জোয়ারের আগে কীটনাশক চিড়া, ভাত বা অন্য কিছুর সঙ্গে মিশিয়ে নদী ও খালের পানির মধ্যে ছিটিয়ে দেয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই বিভিন্ন প্রজাতির মাছ কীটনাশকের তীব্রতায় নিস্তেজ হয়ে পানিতে ভেসে ওঠে। তারা ওই মাছ উঠিয়ে প্রথমে স্থানীয় আড়তে নিয়ে যায়। কোনও কোনও জেলে আবার বন বিভাগের পাস ছাড়াই বনের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে এ প্রক্রিয়ায় মাছ শিকার করেন। এসব মিশমিশ্রিত মাছ পরে সরবরাহ করা হয় বিভিন্ন হাটবাজারে।