
পয়োবর্জ্য এখন সম্পদ, তৈরি হচ্ছে নিরাপদ জৈব সার
‘পয়োবর্জ্য মানে আবর্জনা’– এ ধারণাই পাল্টে দিয়েছে নীলফামারীর সৈয়দপুর পৌরসভা। পয়োবর্জ্য এখন পরিণত হয়েছে সম্পদে। এ থেকে তৈরি হচ্ছে নিরাপদ জৈব সার। ওয়াটারএইড বাংলাদেশ ও সমাজ কল্যাণ সংস্থা (এসকেএস) ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে পয়োবর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং সেখান থেকে দুর্গন্ধমুক্ত নিরাপদ জৈব সার উৎপাদন করে সারা দেশে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে সৈয়দপুর পৌরসভা।
সরেজমিন দেখা যায়, সৈয়দপুর পৌরসভার ১৫টি ওয়ার্ডের প্রতিটি পাড়া-মহল্লা থেকে গৃহস্থালি ও মানববর্জ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। পয়োবর্জ্য খালি করতে পৌরসভায় লিখিত আবেদন করলেই বাসার সামনে চলে যায় বিশাল ট্যাংকসহ গাড়ি। ৩৩ হাজার পরিবার এবং ছয়টি হাটবাজারের মানববর্জ্য গাড়িতে সংগ্রহ করা হয়। এরপর সেগুলো নেওয়া হয় শহরের সুরকী মহল্লার শোধনাগারে। ১৭০ শতক জমির ওপর গড়ে ওঠা ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে পাঁচটি ধাপে পয়োবর্জ্যকে জৈব সারে রূপান্তরিত করা হয়।
সৈয়দপুর পৌরসভার বাসিন্দা মশিউর রহমান জানান, আগে মেথর দিয়ে পয়োবর্জ্য পরিষ্কার করাতেন। আগে বর্জ্য এখানে-সেখানে ফেলা হতো। দুর্গন্ধ বের হতো। কোথায় বর্জ্য ফেলবে, সেটা নিয়েও দুশ্চিন্তা ছিল। কিন্তু এখন আর সেই সমস্যা নেই। পৌরসভা থেকে পয়োবর্জ্য সংগ্রহ করা ট্রাক চালুর পর বছরে একবার নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে সেই ট্রাকের মাধ্যমে সেপটিক ট্যাংক পরিষ্কার করিয়ে নিচ্ছেন।
তিনি বলেন, ‘গন্ধ ও ঝামেলা ছাড়াই ট্রাকে বর্জ্য অপসারণ করা যাচ্ছে। আবার সেই পয়োবর্জ্য থেকে সার উৎপাদন করা হচ্ছে। এমন উদ্যোগ সত্যি প্রশংসনীয়।’
পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘এ প্ল্যান্টের কার্যক্রমের ফলে পৌরসভার পয়োবর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। এখন খালগুলোতে পয়োবর্জ্য ফেলার প্রবণতা কমেছে। আগের মতো যেখানে-সেখানে ময়লা পড়ে থাকে না। ১ হাজার লিটার পয়োবর্জ্য পরিষ্কার করতে ১ হাজার টাকা এবং সাড়ে ৩ হাজার লিটার পরিষ্কার করতে আড়াই হাজার টাকা দিতে হয় সেবা গ্রহীতাকে। এজন্য পৌরসভায় আবেদন করতে হয়। আবেদনের কয়েকদিনের মাথায় বাড়িতেই পৌঁছে যায় পৌরসভার নিজস্ব পরিবহন ভেকু ট্রাক।’