শিক্ষায় পরিদর্শন ও নিরীক্ষা: সফটওয়্যারে অনীহা, মূলে অবৈধ সুবিধা
শিক্ষা খাতে নিরীক্ষা কার্যক্রম গতিশীল করতে এবং দীর্ঘদিনের ‘বদনাম’ ঘোচাতে বানানো হয়েছিল সফটওয়্যার। কিন্তু অবৈধ সুবিধার সুযোগ বন্ধ হওয়ার শঙ্কায় নানা অজুহাতে সফটওয়্যারের ব্যবহার বাধাগ্রস্ত করার অভিযোগ উঠেছে একশ্রেণির কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এরই মধ্যে পেরিয়ে গেছে সফটওয়্যার কোম্পানির সঙ্গে সার্ভিসসংক্রান্ত চুক্তির মেয়াদও। এতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) ভেস্তে যেতে বসেছে বদনাম ঘোচানোর উদ্যোগ। বিষয়টি কর্মকর্তাদের কাছে ‘সফটওয়্যার কেলেঙ্কারি’ নামে পরিচিতি পেয়েছে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শনকালে অবৈধ আর্থিক সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ আছে ডিআইএর নিরীক্ষা দলের বিরুদ্ধে। মূলত এ বদনাম ঘোচাতে সফটওয়্যারের মাধ্যমে নিরীক্ষা পরিচালনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রভাবশালী কয়েক কর্মকর্তার অসহযোগিতা ও কূটচালে প্রশংসনীয় এ উদ্যোগ ভেস্তে যেতে বসেছে। ফলে গচ্চা যাবে সফটওয়্যার তৈরি বাবদ খরচ হওয়া অর্ধকোটি টাকাও।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সফটওয়্যার তৈরির সময়ই সার্ভারের ডেটা স্টোরেজ ক্যাপাসিটি বা তথ্য সংরক্ষণ ক্ষমতার বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া দরকার ছিল। ডিআইএর একাধিক সাবেক কর্মকর্তা অবশ্য জানান, তথ্য সংরক্ষণের জায়গার বিষয়টি তৎকালীন কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হলেও তা আমলে নেয়নি। এতে মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিরীক্ষার পরই পূর্ণ হয়ে যায় সার্ভারের স্টোরেজ ক্যাপাসিটি। ফলে ওই সফটওয়্যারের মাধ্যমে আর কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিরীক্ষা করা সম্ভব হয়নি। সার্ভিসসংক্রান্ত চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় এখন সফটওয়্যারে কোনো ত্রুটি দেখা দিলে সহযোগিতা পাবে না ডিআইএ। এতে সফটওয়্যার ব্যবহারের নতুন উদ্যোগও বাধাগ্রস্ত হতে পারে।
ডিআইএ পরিচালক অধ্যাপক অলিউল্লাহ্ মো. আজমতগীর অবশ্য আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কারিগরি ত্রুটির কারণে কিছুদিন সফটওয়্যারটি ব্যবহার করা সম্ভব হয়নি, এটা সত্য।আশা করছি, শিগগির আবার সফটওয়্যারটির ব্যবহার শুরু হবে। এ ছাড়া উন্নত প্রযুক্তিসম্পন্ন (ফোরআইআর টেকনোলজি) নতুন একটি সফটওয়্যার তৈরিরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।এতে পুরোপুরি ডিজিটাল হবে ডিআইএ।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার দায়িত্ব গ্রহণের আগেই সফটওয়্যারটি কেনার টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। আমি দায়িত্ব নিয়ে সফটওয়্যারটির সব ধরনের ত্রুটির সমাধান করেছি। কিছুদিন আগে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের ক্লাউড সার্ভিসে সফটওয়্যারটির হোস্টিং এবং ডেটা সংরক্ষণের অনুমতি পেয়েছি। আশা করছি, এখন সফটওয়্যারটি ব্যবহারে আর সমস্যা হবে না।’