বঙ্গবন্ধুর সোনার মানুষ অন্বেষণ

জাগো নিউজ ২৪ ড. মিল্টন বিশ্বাস প্রকাশিত: ১৭ মার্চ ২০২৩, ০৯:০৯

২০২৩ সালের ১৭ মার্চে এসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন এবং একইদিন জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশকে গড়ে তোলার জন্য ‘সোনার মানুষ’ অন্বেষণ করতে হচ্ছে আমাদের। জাতির পিতার জন্মদিনে জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন খুবই তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। এরকম দিন এখনকার প্রজন্মের জীবনে সত্যিই অভিনব।তাছাড়া ১৯৯৭ সাল থেকে জাতীয় শিশু দিবস পালন করা শুরু হলেও বঙ্গবন্ধুকে নিবিড়ভাবে জানার সুযোগ এ প্রজন্মের হয়েছে গত ১৪ বছরে। তারা জেনেছে, স্বাধীনতার আগে থেকেই বঙ্গবন্ধু শিশুদের ভালোবাসতেন। তিনি বিশ্বাস করতেন, আজকের শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। ভবিষ্যতে দেশ গড়ার নেতৃত্ব দিতে হবে আজকের শিশুদেরই। তাই শিশুরা যেন সৃজনশীল মুক্তমনের মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠে তিনি সব সময়ই তা প্রত্যাশা করতেন। তিনি যে সোনার মানুষ খুঁজেছেন তা এই শিশুদের সুষ্ঠু বিকাশের মধ্য দিয়ে তৈরি করা সম্ভব বলে আমরা মনে করি।


বঙ্গবন্ধু ছিলেন মাটির মানুষ ও সাধারণ মানুষের নেতা। এজন্য তাঁর সহজ-সরল আচরণ শত্রু-মিত্র সকলকে আকৃষ্ট করত। মানুষের কল্যাণের জন্য নিবেদিত ছিলেন তিনি আজীবন। ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী পণ্ডিত জওহরলাল নেহেরুর জন্মদিন জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালিত হয়। কারণ তিনিও শিশুদের ভালোবাসতেন। বিশ্বের সকল মহামানব শিশুবান্ধব ছিলেন, শিশুদের প্রিয় ছিলেন। মহান নেতা হয়েও, রাজনৈতিক কাজে ব্যস্ততা সত্ত্বেও বঙ্গবন্ধু কখনো তাঁর শিশুপুত্র রাসেলকে আদর করতে ভোলেননি। কোথাও যেতে তিনি রাসেলকে সঙ্গে নিয়ে যেতেন। শিশু রাসেলও তাঁকে খুব ভালোবাসতো। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা তাঁর ‘আমাদের ছোট্ট রাসেল সোনা’ গ্রন্থে লিখেছেন, ‘রাসেল আব্বাকে ছায়ার মতো অনুসরণ করতো। আব্বাকে মোটেই ছাড়তে চাইতো না।’ তিনি আরো লিখেছেন, ‘রাসেলের সব থেকে আনন্দের দিন এলো যেদিন আব্বা ফিরে এলেন। এক মুহূর্ত যেন আব্বাকে কাছ ছাড়া করতে চাইতো না। সব সময় আব্বার পাশে ঘুরে বেড়াতো।’ শিশুরা সুন্দর স্বপ্ন দিয়ে তাদের নিজস্ব জগৎ নির্মাণ করে। বঙ্গবন্ধুও তাঁর রাজনৈতিক জীবন স্বপ্ন দিয়ে গড়ে তুলেছিলেন। লালিত স্বপ্নকে বাস্তবে রূপদান করেছিলেন। শিশুদের সার্বিক কল্যাণের লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু ১৯৭৪ সালে শিশু আইন প্রণয়ন করেন। পরবর্তীকালে তারই আলোকে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি, শিশু হাসপাতাল ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠিত হয়। এছাড়া শিশুদের জন্য আরো নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।


বঙ্গবন্ধু ছিলেন শিশুদের প্রিয়জন। শিশু-কিশোরদের কাছেও তিনি ছিলেন ‘মুজিব ভাই’। ১৯৬৩ সালে ঢাকা প্রেস ক্লাবে আয়োজন করা হয় দশ দিনব্যাপী শিশুমেলা। ওই শিশুমেলায় বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘এই পবিত্র শিশুদের সঙ্গে মিশি মনটাকে একটু হালকা করার জন্য।’ শামসুজ্জামান খান স্মৃতিচারণ করেছেন এভাবে- ‘১৯৬৩ সালে শেখ সাহেবকে আরও ঘনিষ্ঠভাবে দেখার ও কাছে পাওয়ার সুযোগ ঘটে। আমরা ওই বছরে কেন্দ্রীয় কচি-কাঁচার মেলার উদ্যোগে ঢাকাস্থ প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে এক শিশু-কিশোর আনন্দমেলার আয়োজন করি। সেই মেলায় তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। তিনি আগ্রহসহকারে আসেন এবং মেলার প্রদর্শনী ও স্টল পরিদর্শন করেন। আনন্দমেলার নিরাপত্তাসহ অন্যান্য বিষয় দেখাশোনার জন্য কচি-কাঁচার মেলার সদস্যদের নিয়োগ করা হয়। পুলিশ বা শান্তিবাহিনি, গোয়েন্দা- সবই ছিল কচি-কাঁচার মেলার সদস্য। শেখ সাহেব যখন প্রদর্শনী দেখছিলেন তখন তাঁর কাছ থেকে মেলার গোয়েন্দা বাহিনি একটি লোককে আটক করে। তার চেহারা উসকো-খুশকো, গায়ে একটি কাঁথা জড়ানো। ক্ষুদে গোয়েন্দারা তার দেহ তল্লাশি করে তার কাছে মেলার একটি ম্যাপ ও কিছু কাগজপত্র পায় এবং পরে দেখা যায় ক্ষুদে গোয়েন্দারা যাকে পাকড়াও করেছে সে সরকারের আসল গোয়েন্দা। শেখ সাহেবের পিছু নিয়ে আনন্দমেলায় ঢুকেছে। শেখ সাহেব সরকারি গোয়েন্দাকে কাছে ডেকে বললেন, ‘চান্দু, এখানেও আমার পিছু নিয়েছ- শিশুদের সঙ্গে একটু আনন্দ করবো তাতেও ফেউ লাগিয়ে রেখেছে সরকার। যা মাফ করে দিলাম।’ পরে দাদাভাইয়ের দিকে ঘুরে বললেন, দাদাভাই, আপনার গোয়েন্দারা সরকারি গোয়েন্দাদের উপর টেক্কা দিয়েছে, সাবাস!’


বঙ্গবন্ধু ১৯৭২-এর মার্চ মাসে রাষ্ট্রীয় সফরে সোভিয়েত ইউনিয়ন গিয়েছিলেন। সে সময় শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের পরামর্শে রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই মুক্তিযুদ্ধ, গণহত্যা, পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকারের অত্যাচারের দৃশ্য নিয়ে ৫ থেকে ১২ বছরের ১৫-১৬ জন শিশুর আঁকা ছবি সোভিয়েত প্রেসিডেন্ট ব্রেজনেভকে উপহার হিসেবে দেয়ার জন্য গণভবন ‘সুগন্ধা’য় উপস্থিত হন। সঙ্গে ছিলেন ড. আবদুল্লাহ আল মুতী শরফুদ্দীন ও লুৎফুল হায়দার চৌধুরী। শিশুদের আঁকা ছবিগুলো বঙ্গবন্ধুর হাতে তুলে দেয়া হয়। বঙ্গবন্ধু ছবি দেখে মুগ্ধ হয়ে বলেন, ‘আমার দেশের শিশুরা এমন নিখুঁত ছবি আঁকতে পারে, এসব না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না। তিনি আরো বলেছিলেন, ‘আজকের কর্মব্যস্ত সারাটা দিনের মধ্যে এই একটু খানি সময়ের জন্য আমি শান্তি পেলাম। শিশুদের সান্নিধ্য আমাকে সব অবসাদ থেকে মুক্তি দিয়েছে।’ বঙ্গবন্ধু বলতেন, ‘শিশু হও, শিশুর মতো হও। শিশুর মতো হাসতে শেখো। দুনিয়ার ভালোবাসা পাবে।’ সোনার মানুষ ঠিক এরকমই চেয়েছিলেন তিনি।


সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও