শূন্য অগ্রগতির প্রকল্প, সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হোক

যুগান্তর সম্পাদকীয় প্রকাশিত: ১২ মার্চ ২০২৩, ০৯:৪১

অর্থবছরের প্রথম কয়েক মাস বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতির বিষয়টি প্রায় নিয়মে পরিণত হয়েছে।


প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রায় প্রতিটি স্তরে দুর্বল পরিকল্পনা, অদক্ষতা ও দায়িত্বে অবহেলার কারণেই এমনটি ঘটছে। উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শুরুর আগেই ব্যয় বেড়েছে দ্বিগুণ, এমন নজিরও রয়েছে।


নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ শুরু ও শেষ না হলে প্রকল্পের ব্যয় বাড়ে; জনদুর্ভোগ বাড়ে। এ ছাড়া প্রকল্পের কাজ শেষ হতে দেরি হলে মানুষ সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের সুফল প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হয়।


উন্নয়ন প্রকল্পে শূন্য অগ্রগতি দিয়ে অর্থবছর পার করার বিষয়টি উদ্বেগজনক। জানা যায়, শূন্য অগ্রগতি নিয়ে অর্থবছর পার করছে সরকারের দুই শতাধিক প্রকল্প। এক টাকাও খরচ করতে পারেনি এমন বহু প্রকল্পও রয়েছে। এ ছাড়া পাঁচ শতাধিক প্রকল্পের অগ্রগতি সন্তোষজনক নয়।


বিশ্লেষকদের মতে, প্রকল্প বাস্তবায়নে এমন চিত্র শুধু বিস্ময়করই নয়, এটি বড় ধরনের দায়িত্বহীনতার পরিচয়ও বটে। বস্তুত যথাযথ জবাবদিহির অভাবেই এমনটি ঘটছে। প্রকল্পের এমন বেহাল বাস্তবায়ন নিয়ে সংশ্লিষ্টরা গৎবাধা কিছু অজুহাত দেখিয়ে থাকে; সেগুলো কতটা গ্রহণযোগ্য? পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলমের মতে, এসব ঘটনার দায় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ও এড়াতে পারে না। তবে মূল দায়দায়িত্ব হচ্ছে প্রকল্প পরিচালক (পিডি) এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের। প্রকল্পসংশ্লিষ্টদের তাগিদ দেওয়ার পাশাপাশি এক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের নজরদারি আরও বাড়ানো দরকার। প্রকল্পের ধীরগতির কারণে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্তদের যথাযথ শাস্তির আওতায় আনা হলে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে এমন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতো না। অতীতে একনেক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় বাড়ানো নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করলেও প্রকল্প বাস্তবায়নে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি লক্ষ করা যাচ্ছে না। ইতঃপূর্বে পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) প্রকল্পভিত্তিক মূল্যায়নে উল্লেখ করা হয়েছে, বারবার প্রকল্প সংশোধন ও মেয়াদ বাড়ানোর ফলে অনেক ক্ষেত্রে কাজের গুণগত মান বজায় রাখা সম্ভব হয়নি।


যেসব প্রকল্পের অগ্রগতি শূন্য, সেসব প্রকল্পের পরিচালকদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা দরকার। প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতি-বছরের পর বছর এই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি মেনে নেওয়া যায় না। কোনো কোনো প্রকল্পে অর্থ ব্যয় হলেও প্রকল্পের বাস্তব অগ্রগতি সন্তোষজনক নয়-এটিও মেনে নেওয়া যায় না। আমরা মনে করি, সব প্রকল্পের সব ধরনের ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন তোলা উচিত। অভিযোগ রয়েছে, প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের অধিকাংশই সময় নির্ধারণ ও অন্যান্য বিষয়ে দক্ষ হন না। অবশ্য এর বাইরে নানা ধরনের কারসাজির অভিযোগও রয়েছে। ফলে নির্ধারিত সময়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা যেমন সম্ভব হয় না, তেমনি প্রকল্পের ব্যয়ও কয়েকগুণ বৃদ্ধি পায়। সুষ্ঠুভাবে প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে দেশে আগে যেসব সমস্যা বিদ্যমান ছিল, এর অধিকাংশ এখনো বহাল রয়েছে, যা থেকে মুক্ত হওয়া জরুরি। দুর্নীতি, অদক্ষতা, দায়িত্বহীনতার বৃত্ত থেকে বের হতে হবে। সরষের ভেতর ভূত থাকলে তা তাড়ানোর পদক্ষেপ নিতে হবে। ইতঃপূর্বে আইএমইডি প্রকল্প বাস্তবায়নে বেশকিছু বাধা চিহ্নিত করেছিল। সেসব সমস্যা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিশ্লেষণ করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের কৌশল নির্ধারণে গুরুত্বারোপ করতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে সংশ্লিষ্টদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও