হর্নের অত্যাচার: যাদের দেখার কথা, কানেই যেন যায় না তাদের
নিউ ইস্কাটন রোড ধরে মগবাজার মোড়ের দিকে যাচ্ছিল একটি মোটর সাইকেল। অফিস সময়ে সামনে গাড়ির লম্বা সারি। এর মধ্যে সেই বাইক চালক তীব্র শব্দে হর্ন বাজাচ্ছিলেন।
“কেন অযথা হর্ন দিচ্ছেন?” – এই প্রশ্নে বাইকার বললেন, “গাড়িটা তো একটু চাপতে পারে।”
“কোথায় চাপবে? সামনে দেখছেন না সব গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে?”- এই বক্তব্যের জবাব না দিয়ে বিড়বিড় করে কিছু একটা বলতে লাগলেন তিনি।
অকারণ হর্ন বাজানোর প্রবণতা নিয়ে ত্যক্ত বিরক্ত বহু মানুষ। সচেতনতা গড়ার চেষ্টায় সামাজিক মাধ্যমের পাশাপাশি চলছে নানা চেষ্টা। কিন্তু কাজের কাজ হচ্ছে না কিছুই।
সরকারি সংস্থা পরিবেশ অধিদপ্তরও মাঝেমধ্যে অকারণে হর্ন বাজানোর প্রবণতা নিয়ে প্রচার চালায়। এটা কীভাবে মানুষের মৃত্যুর কারণ পর্যন্ত হতে পারে, সে বিষয়টিরও উল্লেখ থাকে তাদের প্রচারপত্রে। পত্রপত্রিকায় বিজ্ঞাপন আকারেও তা ছাপা হয়।
তবে এই প্রচার অনেকটা দিবসকেন্দ্রিক। উচ্চশব্দের হর্ন বন্ধে বছরের বেশিরভাগ সময় কোনো কার্যকর পদক্ষেপ থাকে না। ফলে হর্নের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে প্রচারপত্রে লেখাই সার হয়।
অধিদপ্তর জানিয়ে দিয়েছে, ঢাকায় সর্বোচ্চ কত মাত্রার হর্ন বাজানো যাবে। তবে গাড়ির হর্নের মাত্রা যেন এর চেয়ে বেশি না যায়, তা গাড়ি বা মোটর সাইকেল সংযোজন পর্যায়ে নিশ্চিত করার কোনো উদ্যোগই নেওয়া হয়নি।
দেশে হাইড্রলিক হর্ন নিষিদ্ধ করা হয়েছে ২০১৭ সালেই। কিন্তু ‘উচ্চ শব্দ উৎপাদনকরী’ অন্য হর্নের বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। যদিও এমনও দেখা গেছে, ঢাকায় ১১০ ডেসিবল পর্যন্ত মাত্রার শব্দ উৎপন্ন করছে সেগুলো। কিন্তু আমদানিতে নিষেধ নেই।
সড়ক পরিবহন আইনে ‘উচ্চ শব্দের হর্ন’ বাজালে ১০ হাজার টাকা জরিমানার কথা বলা আছে। এ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয় পুলিশ। কিন্তু হর্নের বিষয়ে তাদের পদক্ষেপ নেই বললেই চলে।
পুলিশের একজন কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন, কেবল হাইড্রোলিক হর্ন পেলেই তারা ব্যবস্থা নেন। অন্য হর্ন কী মাত্রায় বাজল, সেটি তারা দেখেন না।