জন্মহার বাড়াতে চীনে বিয়ের খরচ কমছে
চীনে জন্মহার বাড়ানোর জন্য প্রথাগত বিয়ের খরচ কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ ছাড়া জন্মহার বাড়াতে দেশজুড়ে আরও নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
চীনে ঐতিহ্যবাহী বিয়ের ক্ষেত্রে উপহার বা কাইলি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটি মূলত একধরনের পণপ্রথা। বিয়ের সময় বরপক্ষ আন্তরিকতাস্বরূপ উপহার কনেপক্ষকে দিয়ে থাকে। ২০২০ সালে টেনসেন্ট নিউজ ১ হাজার ৮৪৬ জনের ওপর একটি সমীক্ষা চালিয়েছে। ওই সমীক্ষায় দেখা গেছে, অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে প্রায় তিন-চতুর্থাংশ বিয়ের ক্ষেত্রে এ প্রথা মেনে চলে। এসব বিয়েতে পরিবারগুলো উপহার হিসেবে হাজার হাজার ডলার প্রত্যাশা করে।
দেশে জন্মহার বাড়ানোর জন্য এটাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রথম উদ্যোগ নয়। চীনের জনসংখ্যার হার দ্রুত কমে যাওয়ায় আগের উদ্যোগগুলোই নতুন রূপে ফিরিয়ে আনছে কর্তৃপক্ষ। কারণ, দেশটিতে জনসংখ্যার হার দ্রুত কমে যাওয়ার অর্থ হলো শ্রমশক্তিও সংকুচিত হওয়া। এতে ভোক্তাদের চাহিদা কমে যায় এবং স্বাস্থ্যসেবার ওপর বাড়তি চাপের সৃষ্টি হয়।
চীনে গত ৬০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো বিপুলসংখ্যক জনসংখ্যা হ্রাস পাওয়ার এক মাসেরও কম সময় পরে পরিবার উন্নয়ন সংস্থার প্রধান স্থানীয় সরকার কর্তৃপক্ষকে জন্মহার বাড়াতে উৎসাহ দেওয়ার জন্য ‘সাহসী ও সৃজনশীল’ পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। বিয়ের বাড়তি খরচ, বিশেষ করে এই অর্থনৈতিক সংকটের সময়ে খরচের কারণে বিয়েতে অনীহা জন্মহার কমার একটি মূল কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
গত জানুয়ারিতে সেন্ট্রাল হেবেই প্রদেশে বিয়ের খরচের এ প্রথা ভাঙার উদ্যোগ শুরু হয়। এর মধ্যে কাইলি ও ওয়েডিং গেমও অন্তর্ভুক্ত। উপকূলীয় জিয়াংসু প্রদেশের একটি কাউন্টিতে ‘সবচেয়ে সুন্দর শাশুড়ি’ খোঁজার জন্য গত মাসে একটি প্রচারণা শুরু হয়। যিনি বিয়েতে খুব বেশি অর্থ নেবেন না, তিনিই হবেন ‘সবচেয়ে সুন্দর শাশুড়ি’।
জিয়াংজির একটি শহরে গত ফেব্রুয়ারিতে অবিবাহিত নারীদের একটি চিঠিতে স্বাক্ষর করানো হয়েছে। এ স্বাক্ষরের মাধ্যমে তাঁরা বিয়েতে বিপুল পরিমাণ কাইলি না চাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। একই প্রদেশের রাজধানীতে আজ বুধবার আন্তর্জাতিক নারী দিবসে একটি গণবিয়ের আয়োজন হয়েছে। এ বিয়ের স্লোগান—‘আমরা যৌতুক নয়, কনের সুখ চাই’।
- ট্যাগ:
- আন্তর্জাতিক
- বিয়ের খরচ
- জন্মহার