কালশী ফ্লাইওভারে মরণ ফাঁদ
মিরপুরের উত্তর দিকের প্রবেশদ্বার কালশী মোড়। যানজট নিরসনে সেখানে নির্মিত হয়েছে ত্রিমুখী ফ্লাইওভার। ২ হাজার ৩৩৫ মিটার দীর্ঘ এ ফ্লাইওভার পেয়ে সন্তুষ্ট মিরপুরবাসী। তবে, কালশী মোড়ের ঠিক ওপরে ফ্লাইওভারের একটি অংশের নকশা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ভুল নকশার কারণে সেখানে সড়ক দুর্ঘটনার মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি হয়েছে বলে দাবি করছেন চালকেরা।
মিরপুর-১২, মিরপুর ডিওএইচএস ও ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট এলাকার ইসিবি চত্বর থেকে তিনটি সড়ক এসে মিলেছে কালশীতে। ত্রিমুখী ফ্লাইওভারের প্রতিটি পথেই রয়েছে ২টি করে লেন। লেন বিভাজন করা আছে সাদা দাগে। মিরপুর ডিওএইচএস থেকে কালশী মোড়ে এসে ইসিবি চত্বরের দিকে যাওয়ার পথটি অনেক চালক বুঝতে পারছেন না। কনফিউশনের (দ্বিধা) কারণে অনেকে উল্টো পথে গাড়ি ঢুকিয়ে দিচ্ছেন। এতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে।
দুর্ঘটনা ও যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তিন রাস্তার মোড়ে কনফিউশন থেকে দুর্ঘটনা ঘটার ঝুঁকি আছে। দুর্ঘটনা ঘটার পর ‘রিয়েক্ট’ না করে আগেই করা উচিত।
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি দুপুর ১টা ২৫ মিনিটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের 'ট্রাফিক এলার্ট' গ্রুপে মুসতাসির সাকিব নামে এক ব্যক্তি ৩০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও প্রকাশ করেন। সেখানে দেখা যায়, ব্যক্তিগত গাড়িতে তিনি ইসিবি চত্বর থেকে ফ্লাইওভার দিয়ে কালশী মোড় হয়ে ডান লেন দিয়ে মিরপুর ডিওএইচএসের দিকে যাচ্ছিলেন। পথে মিরপুর ডিওএইচএসের দিক থেকে ডান লেনেই (যে লেন দিয়ে তিনি যাচ্ছেন) একটি ব্যক্তিগত গাড়ি ঢুকে পড়ে। স্পিড নিয়ন্ত্রণে থাকায় তিনি ব্রেক করেন। ফলে কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি। তবে তিনি ওই গাড়িকে রিভার্স (পিছে) যেতে বাধ্য করেন।
ভিডিওর ক্যাপশনে তিনি লেখেন, 'সরকার আমাদের একটা সুন্দর পরিকাঠামো দিয়েছে। কিন্তু আমরা যেভাবে ব্যবহার করছি তা দুঃখজনক। গতকাল হঠাৎ এই গাড়িটি সম্পূর্ণ ভুল দিক থেকে এসে হাজির হয়। জানি না, এই চালক জানে কি না তার এই ধরনের কাজে কী ঘটতে পারে। যেহেতু আমরা নাগরিকরা নিয়ম মেনে চলছি না, তাই আমাদের এই ফ্লাইওভারের পুরো সড়কে রোড ডিভাইডার দরকার। কালশী ফ্লাইওভারের ওপরে বাঁক নেওয়ার সময় চালকরা সচেতন থাকবেন।'
পরদিন ২৬ ফেব্রুয়ারি কালশী ফ্লাইওভার ঘুরে দেখা যায়, কালশী মোড়ে দুটি র্যাম্প ও একটি সংযোগ সড়ক খুব কাছাকাছি কয়েক মিটারের মধ্যে তৈরি করা হয়েছে। যার ফলে কিছু গাড়ি এক র্যাম্প দিয়ে উঠে উল্টো পথে আরেক র্যাম্পে দিয়ে নামছে। ১০ মিনিটের ব্যবধানে ২টি মোটরসাইকেল চালককে এমন করতে দেখা গেছে। এদের কারণে বেশ কয়েকটি গাড়িকে জরুরি ভিত্তিতে ব্রেক করতে দেখা গেছে। তা না হলে নিশ্চিতভাবে দুর্ঘটনা ঘটত সেখানে।
- ট্যাগ:
- বাংলাদেশ
- ঝুঁকিপূর্ণ
- সড়ক দুর্ঘটনা
- ফ্লাইওভার