নিষ্পত্তি হয়নি সাড়ে ১১ লাখ বীমা দাবি
ব্যাংকিং খাতের পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে বীমা খাত; কিন্তু এ খাতে এখনো রয়ে গেছে বিস্তর আস্থার সংকট। গ্রাহকদের আপত্তির একটি বড় জায়গা কম্পানিগুলো বীমা দাবি পূরণে গড়িমসি করা। যদিও বীমা দাবি পূরণের হার বাড়ছে; কিন্তু না করার সংখ্যাও অনেক।
গত বছর বিভিন্ন কম্পানিতে উপস্থাপিত ৩০ লাখ ৬২ হাজার ৪৬৮টি বীমা দাবির মধ্যে নিষ্পত্তি করা হয়েছে ১৯ লাখ ১২ হাজার ৮৬৯টির। বাকি ১১ লাখ ৪৯ হাজার ৫৯৯টির নিষ্পত্তি করা হয়নি। নিষ্পত্তি করার হার ৬২.৪৬ শতাংশ। আর নিষ্পত্তি না করার হার ৩৭.৫৪ শতাংশ।
গতকাল সোমবার রাজধানীর মতিঝিলে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জয়নুল বারী এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, ২০২২ সালের শেষে গ্রস প্রিমিয়ামের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ৮১২ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। যার মধ্যে লাইফ বীমার গ্রস প্রিমিয়াম ১১ হাজার ৩৯৯ কোটি ৫১ লাখ টাকা। আর নন-লাইফে এর পরিমাণ পাঁচ হাজার ৪১৩ কোটি ১৪ লাখ টাকা, যা সংকটের এই সময়ে দেশের ব্যাংকিং খাতে বড় তারল্যের জোগান দিয়েছে। লাইফ ও নন-লাইফ বীমা কম্পানির অর্জিত প্রিমিয়ামের ওপর একই বছরে সরকার এক হাজার ৩০৫ কোটি ৭৩ লাখ টাকার ভ্যাট ও ট্যাক্স পেয়েছে। গত বছরে বীমা কম্পানিগুলোতে লাইফ ৩০ লাখ ২৮ হাজার ৯৩০টি এবং নন-লাইফ ৩৩ হাজার ৫৩৮টি বীমা দাবি করা হয়। এর মধ্যে লাইফ ১৮ লাখ ৯২ হাজার ৯৯২টি এবং নন-লাইফ ১৯ হাজার ৮৭৭টি বীমা কম্পানি দাবি নিষ্পত্তি করেছে।
আর্থিক খাতের মধ্যে সবচেয়ে দুর্বল বীমা খাত কেন—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে জয়নুল বারী বলেন, ‘এর কারণ কম্পানি ও আইডিআরএর দোষ। আইডিআরএ প্রতিষ্ঠা হয়েছে ২০১১ সালে। নতুন একটা প্রতিষ্ঠান দেশে হলে তার জনবল, আইন তৈরি করা হয়। এ জন্য সময় লাগে। আমাদের আগে সক্ষমতা ছিল না। এখন আমরা নতুন লোকবল নিয়োগ দিয়েছি। তাঁরা ট্রেনিং করছেন। সেখান থেকে আমরা ভালো অফিসার পাব। নতুন প্রতিষ্ঠান হিসেবে এই যে দুর্বলতা ছিল তা স্বাভাবিক। সময় বেশি লেগেছে, এই দায় অবশ্যই আমাদের।’
তিনি বলেন, ‘যেসব কম্পানির বীমা দাবি আদায়ের হার কম এ ধরনের ছয়টি কম্পানির বোর্ডের সঙ্গে আমরা বৈঠক করেছি।’