
১ মাসে শূন্যরেখা থেকে ২৫২৭ রোহিঙ্গাকে উখিয়ায় স্থানান্তর
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে বান্দরবানের নাইক্ষ্যছড়ির তুমব্রুতে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের সরিয়ে আনার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ৮ম দফায় সোমবার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু বাজার থেকে বাসে করে ৬৭ পরিবারের ২৪২ জন রোহিঙ্গাকে উখিয়া কুতুপালং ট্রানজিট পয়েন্টে আনা হয়েছে।
এর আগে ৭ম দফায় বিভিন্ন সময়ে ৪৬৩ পরিবারের ২২৮৫ রোহিঙ্গাকে উখিয়ায় হস্তান্তর করা হয়েছিল। এতে এক মাসে ২৫২৭ জন রোহিঙ্গাকে সরিয়ে আনা হয়েছে। সোমবার রাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।
তিনি বলেন, 'শূন্যরেখা থেকে তুমব্রুতে আশ্রিত সকল রোহিঙ্গাদের উখিয়া সরিয়ে আনার কাজ শেষ হয়েছে। সর্বশেষ আজকে ৬৭ পরিবারের ২৪২ জন রোহিঙ্গা উখিয়া কুতুপালং ট্রানজিট পয়েন্টে আনা হয়। আমরা সব মিলিয়ে ৫৩০ পরিবারের ২ হাজার ৫২৭ রোহিঙ্গাকে হস্তান্তর সম্পন্ন হয়েছে। তুমব্রুতে আর কোন রোহিঙ্গা নেই।'
আরআরআরসি কার্যালয় থেকে জানা গেছে, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের শূন্যরেখায় রোহিঙ্গাদের দুটি সশস্ত্র সংগঠনের সংঘর্ষে বসতবাড়ি পুড়ে যাওয়া রোহিঙ্গাদের ৫ ফেব্রুয়ারি প্রথম দফায় ১৮০ জন রোহিঙ্গা তুমব্রু থেকে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদে আনার পরে টোকেনের মাধ্যমে পরিচয় পত্র দিয়ে বাসে করে উখিয়া কুতুপালংয়ে জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) ট্রানজিট পয়েন্টে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর একই প্রক্রিয়ায় দফায় দফায় ৫৩০ পরিবারের ২৫২৭ জন রোহিঙ্গাকে হস্তান্তর করা হয়। এরপর কার্যক্রম শেষে তাদের উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্পে স্থানান্তর করা হবে।
সীমান্তে বসবাসকারীদের মতে, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর থেকে রোহিঙ্গারা যখন দলে দলে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে ঢুকছে- তখন কিছু লোক আটকা পড়ে মিয়ানমার এবং বাংলাদেশের মাঝামাঝি ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তে 'নো-ম্যানস ল্যান্ডে'-পাঁচ শতাধিক রোহিঙ্গা পরিবার সেখানে বসবাস করছিল ৫ বছর ধরে।
তুমব্রু সীমান্তের স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ শাহাজান মিয়া বলেন,'অবশেষে আমাদের এলাকা আপাতত রোহিঙ্গা মুক্ত হয়েছে। এতে সীমান্তের মানুষ স্বস্তিবোধ করছে। কারণ প্রায় ৬ বছর ধরে শূন্যরেখা শিবিরের রোহিঙ্গাদের কারণে সীমান্তের মানুষ অনিরাপদ ছিল। পাশাপাশি তাদের অপরাধের কারণে এখানকার লোকজন বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিল। এখন আর গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যাবে না। অন্তত শান্তিতে ঘুমানো যাবে।'