নেপথ্যে তিন কোটি টাকার হাট ইজারা
তখনও চারদিকে ভোরের নিশ্চলতা। বাসার অনেকেই অঘোর ঘুমে। ৬টার দিকে নরসিংদীর শিবপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা হারুনুর রশীদ খানের বাসায় ঢোকে তিন যুবক। দু'জনই তাঁর চেনা। সাতসকালে খুলে দেন দরজা। তারা সময় নেয় কয়েক সেকেন্ড। পেছন থেকে হারুনকে লক্ষ্য করে দুই রাউন্ড গুলি। আর তাতেই বাসার ড্রইংরুমে মুহূর্তেই লুটিয়ে পড়েন তিনি। গুলির আওয়াজে অপ্রস্তুত ঘরের সবাই। স্বজন ও আশপাশের লোকজন আসার আগেই ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়ে তিন দুর্বৃত্ত।
এর পর আশঙ্কাজনক অবস্থায় বর্ষীয়ান এই আওয়ামী লীগ নেতাকে শিবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সংকটাপন্ন হওয়ায় তাঁকে স্থানান্তর করা হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে। সেখানে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রয়েছেন হারুনুর রশীদ।কেন, কারা, কী কারণে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক এই সভাপতিকে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে- এর রহস্য ভেদ করার চেষ্টা করেছে সমকাল। তথ্য অনুসন্ধান বলছে, স্থানীয় হাটের ইজারা নিয়ে বিবাদে গতকাল শনিবার এ ঘটনা ঘটে। দেশের অন্যতম বড় পাইকারি হাট শিবপুরের পুটিয়া।
নানা ধরনের সবজি ছাড়াও এই হাটে বড় পরিসরে গরু-ছাগল কেনাবেচা হয়। এ বছরের ১ ফেব্রুয়ারি ৩ কোটি ২৫ লাখ ১ হাজার টাকায় পুটিয়ার হাটের ইজারা পান খোরশেদ হাজি। তবে গত বছর এই হাটের ইজারা যৌথভাবে পেয়েছিলেন খোরশেদ হাজি ও আরিফ সরকার। এবার ইজারা না পেয়ে হারুনুর রশীদের ওপর ক্ষুব্ধ ছিল আরিফ সরকার। ছক করেই হারুনকে হত্যা করতে গতকাল ভোরে ঘনিষ্ঠ সহযোগী মহসিন মিয়াসহ তিনজনকে নিয়ে মোটরসাইকেলে আওয়ামী লীগ নেতার বাসার সামনে যায় আরিফ। এর পর বাসায় ঢুকে গুলি করে সেখান থেকে পালায়।১৯৮৬ সালে উপজেলা চেয়ারম্যান হারুনের ভাই আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি রবিউল আওয়াল কিরন খানকেও সন্ত্রাসীরা গুলি করে হত্যা করেছিল। দীর্ঘ ৩৭ বছর পরও সেই হত্যা মামলার কোনো কিনারা হয়নি। আওয়ামী লীগ নেতা হারুনুর রশীদের ভাতিজা রাব্বি খান বলেন, চিকিৎসকরা চাচাকে ৭২ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। অস্ত্রোপচার করে দুটি গুলি বের করা হয়েছে।