দুধ-কলা একসঙ্গে খেলে ঘটে যে বিপদ
ওয়ার্কআউটের পরে অনেকেই কলা এবং দুধ খান। আসলে দুধ আর কলার কম্বিনেশন ছোটবেলা থেকেই সবারই খুব পছন্দের। আজও বাবা-মা তাদের সন্তানদের কলা ও দুধ খেতে দেন বা খেতে বলেন। দুধ আর কলা দুটিই অত্যন্ত পুষ্টিকর খাদ্য উপাদান। দুধ-কলা একসঙ্গে একটি সুস্বাদু পানীয়র বিকল্প। ওজন বৃদ্ধি এবং শরীর গঠনের জন্য পুষ্টিবিদরাও দুধ এবং কলা খাওয়ার পরামর্শ দেন।
কলা এবং দুধ উভয়ই খুব পুষ্টিকর, তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, এই দুই খাদ্য উপাদান একসঙ্গে খাওয়া অত্যন্ত বিপজ্জনক হতে পারে! আসলে দুধের উপকারিতা আলাদা। এটি প্রোটিন, ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ যেমন রিবোফ্লাভিন, ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন বি ১২-এ ভরপুর। প্রতি ১০০ গ্রাম দুধে ৪২ ক্যালোরি রয়েছে। দুধে ভিটামিন সি এবং ফাইবারের মত গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন নেই। এ ছাড়া এতে খুব কম কার্বোহাইড্রেট থাকে। মানুষ তাদের প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে দুধের ওপর নির্ভর করে।
কলা ভিটামিন বি-৬, ম্যাঙ্গানিজ, ভিটামিন সি, ফাইবার, পটাসিয়াম এবং বায়োটিনের ভালো উৎস। এই মিষ্টি ফলের প্রতি ১০০ গ্রাম ৮৯ ক্যালোরি রয়েছে। তাই এটি আমাদের দীর্ঘ সময়ের জন্য পেট ভরা অনুভব করায়। কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ, কলাকে প্রায়শই অনুশীলনের আগে এবং পরে একটি দুর্দান্ত খাবার হিসাবে বিবেচনা করা হয়।
দুধ-কলা একসঙ্গে খেলে যা হয়-
দুধ এবং কলার সংমিশ্রণ আপনার কাছে উপাদেয় হলেও তা স্বাস্থ্যকর নয়। আসলে এই দুটি জিনিসই একে অপরের পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করে (যেমন দুধে ফাইবার থাকে না, যা কলায় থাকে)। এই দুটি জিনিসের একই পুষ্টি নেই। তবে এই দুটি জিনিস এক সঙ্গে খেলে নানা স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে।
আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে বলা হয়েছে, খাবার এবং তরল একসঙ্গে মেশানোর পদ্ধতিটি মোটেই স্বাস্থ্যকর নয়। আয়ুর্বেদিক তত্ত্ব অনুযায়ী, কলা এবং দুধ একসঙ্গে শরীরের ভিতরে বিষাক্ত উপাদান সৃষ্টি করতে পারে, যা অনেক স্বাস্থ্য সমস্যা বাড়িয়ে তুলতে পারে। এর পাশাপাশি, আয়ুর্বেদে বলা হয়েছে যে কলা এবং দুধ একসঙ্গে শরীর ভার করে দিতে পারে এবং মস্তিষ্কের কাজের প্রক্রিয়াও ধীর করে দিতে পারে।
কলা এবং দুধ খাওয়ার সর্বোত্তম উপায় অবশ্যই ব্যক্তিবিশেষে পরিবর্তিত হয়। আপনি যদি এটিকে প্রি-ওয়ার্কআউট বা ওয়ার্কআউট-পরবর্তী স্ন্যাক হিসেবে খেতে চান, তাহলে দুধ খাওয়ার অন্তত ২০ মিনিট পর একটি কলা খেতে পারেন। দুধের সঙ্গে খাওয়া না গেলেও দইয়ের সঙ্গে কলা খেতেই পারেন।
তবে শরীরে যদি আগে থেকেই কোন স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে থাকে বা যদি কোন অসুস্থতার কারণে নিয়মিত কোন ওষুধ খেতে হয়, তাহলে কখন কী খাবেন আর কী খাবেন না, তা জানার জন্য অবশ্যই বিশেষজ্ঞ পুষ্টিবিদ বা চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।