সোনার গয়না নাকি সোনার বার, কোনটিতে বিনিয়োগ লাভজনক
ব্যাংকে অর্থ জমা রাখা মানেই লোকসান। কারণ, ব্যাংক যে হারে সুদ দিচ্ছে, তার তুলনায় মূল্যস্ফীতি অনেক বেশি। তাতে প্রকৃত আয় কমে যাচ্ছে। ব্যাংক থেকে আমানত সরিয়ে এনে আর্থিক প্রতিষ্ঠানে (লিজিং) রাখবেন, সে উপায়ও নেই। সেখানে সুদ বেশি মিললেও মূল টাকা ফেরত পাওয়া যাবে কি না, সে শঙ্কাও রয়েছে। অন্যদিকে শেয়ারবাজারেও সুখবর নেই। বেশ কিছুদিন ধরেই দরপতন চলছে। এতে বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন।
এমন পরিস্থিতিতে সোনার বাজারে কিছুটা আশা দেখতেই পারেন বিনিয়োগকারীরা। কারণ, গত বছরের শেষ দিকে সোনার দামের গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী। দেশেও গত মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে সোনার দাম রেকর্ড উচ্চতায় ওঠে। প্রতি ভরি বিক্রি হয় ৯৩ হাজার ৪২৯ টাকায়। এখনো দাম ৯২ হাজার ২৬২ টাকা। এমন প্রেক্ষাপটে সোনায় বিনিয়োগ কতটা লাভজনক। আবার সোনার অলংকার নাকি সোনার বার, কোনটিতে টাকা লগ্নি করা বুদ্ধিমানের। চলুন, এমন দুই-তিনটি প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করা যাক।
সোনায় বিনিয়োগের কথা এলেই সবার প্রথম প্রশ্ন, দাম কী আরও বাড়বে? দাম বাড়বে কি না, সেটি নিশ্চিত করে বলার সুযোগ নেই। তবে সোনাকে বলা হয় ‘সেফ হেভেন’। সোনায় বিনিয়োগ সব সময়ই নিরাপদ। যদিও সোনার দামের সঙ্গে বিশ্ব অর্থনীতির গভীর সম্পর্ক রয়েছে। অনিশ্চয়তার সময়টাই আসলে সোনার স্বর্ণসময়। যত বেশি মূল্যস্ফীতি, তত বেশি সোনার মূল্যবৃদ্ধি। ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, উচ্চ মূল্যস্ফীতির সময়েই সোনার দাম সবচেয়ে বেশি বাড়ে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়; অর্থাৎ ২০২০ সালের আগস্টের প্রথম সপ্তাহে বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স (৩১.১০৩৪৭৬৮ গ্রাম) সোনার দাম ২ হাজার ৭০ ডলার ছাড়িয়ে গেছে, যা ইতিহাসের সর্বোচ্চ।
আবার এক বছর আগে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে বিশ্ব অর্থনীতি নতুন করে ঝুঁকির মধ্যে পড়ে। দেশে দেশে মূল্যস্ফীতির রেকর্ড হতে থাকে। তখন সোনার দামও পাল্লা দিয়ে বাড়ে। গত বছরের ৮ মার্চ বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম ২ হাজার ডলার ছাড়িয়ে যায়। তারপর কমতে থাকে। অক্টোবরে ১ হাজার ৬৫০ ডলারে নামে। বছরের শেষ দিকে আবার দাম ঊর্ধ্বমুখী হয়। ১ ফেব্রুয়ারি প্রতি আউন্সের দাম ১ হাজার ৯৫২ ডলারে ওঠে। তারপর আবার কমতে শুরু করেছে।